নড়াইল অফিস:
নড়াইল পৌরসভার দুর্গাপুর এলাকায় গৃহবধূ জান্নাতারা সেতুকে (২৪) নির্যাতনের ঘটনায় ইতোমধ্যে দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। তবে দু’টি মামলায় দুই ধরণের বর্ণনা পাওয়া গেছে। দু’টি মামলার এজাহারে রয়েছে নানা অসঙ্গতি ! গত ১২ মার্চ রাতে গৃহবধূ জান্নাতারা সেতুকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার পরেরদিন (১৩ মার্চ) রাতে গৃহবধূ সেতুর বাবা হোসেন ইমাম বাদি হয়ে নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় গৃহবধূ জান্নাতারা সেতুর স্বামী সজীব মোস্তারীসহ (২৭) শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় আজ বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরে গৃহবধূ সেতুর শ্বশুর বি এম নজরুল ইসলাম ও শাশুড়ি শবনম বেগম নড়াইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমাতুল মোর্শেদার আদালতে হাজির হলে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে স্বামী সজীব মোস্তারী আদালতে হাজির হয়নি।
এদিকে, গত ২৫ মার্চ গৃহবধূ জান্নাতারা সেতু নিজে বাদি হয়ে নড়াইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে অপর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এখানে স্বামী সজীব মোস্তারীসহ শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর ও ননদকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগটি তদন্ত করে আগামি ১৮ মে’র মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
থানায় দায়েরকৃত প্রথম মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে নড়াইলের দুর্গাপুর এলাকার অস্ট্রিয়া প্রবাসী সজীব মোস্তারীর সঙ্গে দক্ষিণ নড়াইলের কুড়িগ্রাম এলাকার হোসেন ইমামের মেয়ে জান্নাতারা সেতুর বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে আয়াত মোস্তারী নিবীড় (৩) ও রাইতা মোস্তারী রাশা (১৮ মাস) নামে দুই সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর জান্নাতারা সেতু জানতে পারেন, স্বামী সজীব মোস্তারী খারাপ প্রকৃতির লোক। এ কারণে সংসারে প্রায়ই অশান্তির সৃষ্টি হয়। গত বছরের ৯ নভেম্বর অস্ট্রিয়া থেকে দেশে আসার পর স্বামী সজীব মোস্তারী স্ত্রীকে মারপিট করে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে। এ পরিস্থিতিতে গত ১২ মার্চ রাতে স্বামী সজীব রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘরের মধ্যে লোহার রড দিয়ে স্ত্রী সেতুকে মাথায় মারতে গেলে ডান হাতের কুনইতে লেগে হাড়ভাঙ্গা জখম হয়।
এদিকে আদালতে দায়েরকৃত দ্বিতীয় মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বামী সজীবসহ অন্য আসামিরা গৃহবধূ সেতুকে রাত ১টার সময় ঘুম থেকে উঠিয়ে ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করে। মামলার ৩ নম্বর আসামি গৃহবধূ সেতুর শাশুড়ি শবনম বেগমের হুকুমে স্বামী সজীব মোস্তারী লোহার রড দিয়ে স্ত্রীকে মাথায় মারতে গেলে ডান হাতের তর্জনি আঙ্গুলে লেগে হাড়ভাঙ্গা জখম হয়। স্বামী সজীব আবারো মারতে লেগে স্ত্রীর ডান হাতের কনুইতে লেগে হাড়ভাঙ্গা জখম হয়।
এক্ষেত্রে দুই মামলায় দুই ধরণের বর্ণনা পাওয়া গেছে। বিশেষ করে ঘটনার শুরুতে একটি মামলায় রাত সাড়ে ১০টা এবং অপর মামলায় রাত ১টা দেখানো হয়েছে। হাড়ভাঙ্গার ক্ষেত্রেও রয়েছে দুই ধরণের বর্ণনা। যদিও মেডিকেল পরীক্ষায় হাড়ভাঙ্গার কোনো আলামত পাননি চিকিৎসকেরা।
শুধু এখানেই শেষ নয়, দু’টি মামলার এজাহারে আরও অসঙ্গতি রয়েছে। প্রথম মামলায় ভূক্তভোগী গৃহবধূর নাম ‘জান্নাতারা সেতু’ উল্লেখ করা হলেও দ্বিতীয় মামলায় জান্নাত আরা সেতু ওরফে এশা হোসেন লেখা হয়েছে।
এদিকে, থানায় দায়েরকৃত প্রথম মামলায় কোনো যৌতুকের কথা উল্লেখ করা না হলেও দ্বিতীয় মামলা স্বামী সজীব মোস্তারী ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে বলে এজাহারে বলা হয়েছে।
প্রথম মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, গৃহবধূ সেতুর শাশুড়ি সাইজ কাঠ দিয়ে তার (সেতু) ডান পায়ে আঘাত করে। সেতুকে মারপিটকালে মামলার আসামিরা জোরপূর্বক চেতনানাশক খায়য়ে দেয়। এ কারণে গৃহবধূ সেতু কিছুক্ষণ কান্নাকাটি করে অচেতন হয়ে পড়েন। এ সুযোগে আসামিরা সেতুর মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়। পরবর্তীতে রাত ২টার দিকে (১২ মার্চ) ইমোতে ভিডিওকলের মাধ্যমে সেতুকে ন্যাড়া অবস্থায় দেখতে পান তার (সেতু) বাবা-মা। মেয়ের এ অবস্থা দেখে রাত সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অপরদিকে আদালতে দায়েরকৃত দ্বিতীয় মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বিয়ের পর থেকে স্বামী সজীব মোস্তারী স্ত্রী সেতুকে যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ রাত ১টার দিকে ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী সেতুকে রাতের খাবার খায়তে না দিয়ে স্বামী সজীব জোরপূর্বক ঘুমের ট্যাবলেট খায়লে দিয়ে ঘরে মধ্যে আটকে রাখে।
এক্ষেত্রে প্রথম মামলায় ‘চেতনানাশক’ খায়য়ে দেয়ার কথা উল্লেখ করা হলেও দ্বিতীয় মামলায় ‘ঘুমের ট্যাবলেট’ উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে হাসপাতালে ভর্তির পর একটি টেলিভিশন সাক্ষাতকারে গৃহবধূ সেতু জানান, তার শাশুড়ি ও ননদ মিলে হাত-পা চেপে ধরে তাকে (সেতু) ছয় থেকে সাতটি ঘুমের ওধুষ ডিসোপ্যান-২এমজি (ফরংড়ঢ়ধহ ২ সম) খায়য়ে দেয়।
এছাড়া প্রথম মামলার বিবরণে গৃহবধূ সেতু তার ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ইমোতে ভিডিওকলের মাধ্যমে তার মাকে জানান। অথচ আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনাটি মোবাইল ফোনে জানানো হয়েছে। এখানে ভিডিওকলের কথা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রথম মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘চেতনানাশক’ খায়য়ে দেয়ার পর আসামিরা যোগসাজশে সেতুর মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়। এদিকে দ্বিতীয় এজাহারে বলা হয়েছে, শাশুড়ি ও দেবর গৃহবধূ সেতুকে ঘরের মেঝেতে চেপে ধরলে স্বামী সজীব বে্লড দিয়ে তার (স্ত্রী) মাথা ন্যাড়া করেন। এছাড়া ভ্রু কেটে দেয়। এখানে শুধু স্বামীর কথা বলা হয়েছে। অথচ প্রথম মামলায় আসামিদের যোগসাজশে চুল কাটার কথা বলা হলেও ভ্রু কাটার কথা বলা হয়নি।
এছাড়া গৃহবধূ সেতুর দেবর মির্জা গালিব সতেজের নাম প্রথম মামলায় না থাকলেও দ্বিতীয় মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় মামলায় ননদ মোনালিসা নিতুকে অভিযুক্ত করা হলেও ঘটনার বর্ণনায় তার নামে কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। উভয় মামলায় সেতুর শ্বশুর নজরুল ইসলামকে ২নম্বর আসামি করা হলেও ঘটনার বিবরণে তার (নজরুল) সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।
প্রথম মামলার বাদী গৃহবধূ সেতুর বাবা হোসেন ইমামসহ দুই স্বাক্ষী ঘটনাস্থল থেকে সেতুকে উদ্ধার করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে আদালতে দায়ের করা অভিযোগে বাদী সেতু জানান, তার মাসহ অপর চার স্বাক্ষী তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ঘটনার রাতে গৃহবধূর আত্মচিৎকারে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন বলে আদালতে দায়েরকৃত বিবরণে উল্লেখ করা হলেও এ তথ্য ঠিক নয়। এমনটিই জানিয়েছেন পাড়া-প্রতিবেশিরা।
গৃহবধূ সেতু গত ১৩ মার্চ নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১৮ মার্চ ছাড়পত্র পেয়েছেন।
এদিকে গৃহবধূ সেতুর শ্বশুরবাড়ির পরিবারের সদস্যরা দাবি করে বলেন, ধন-সম্পত্তির লোভে (শ্বশুরবাড়ির) নিজের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া হয়েছেন সেতু। এ ঘটনায় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে দু’টি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মির্জা গালিব সতেজ জানান, তার অস্ট্রিয়া প্রবাসী মেঝ ভাই সজীব মোস্তারীর সঙ্গে বিয়ের পর থেকে নানা টালবাহানা শুরু করেন সেতু ও তার পরিবার। স্বামী সজীব মোস্তারী ও তার বড় ভাই সবুজ মোস্তারী অস্ট্রিয়া থাকায় তাদের অর্থ-বিত্তের ওপর নজর পড়ে সেতুর বাবার বাড়ির লোকজনের। এছাড়া জান্নাতারা সেতুর বাবা হোসেন ইমাম প্রায় ১৫ লাখ টাকা দেনাগ্রস্থ থাকায় ওই টাকার জন্য মেয়েকে দিয়ে স্বামী ও শ্বশুরকে চাপ সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে সেতু ও তার বাবার বাড়ির লোকজন সজীব মোস্তারীর পরিবারের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলার সৃষ্টি করত।
স্ত্রী সেতুকে নিজস্ব ফ্লাট কিনে দেয়াসহ পরিবার থেকে স্বামী সজীবকে বিচ্ছিন্ন থাকার শর্তপূরণ না হওয়ায় গত ২৯ জানুয়ারি শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি চলে যায় সেতু। নির্যাতনের নাটক সাজিয়ে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি হতে চায়লেও ব্যর্থ হন গৃহবূধ সেতু। এ ঘটনায় সজীবদের পরিবারের পক্ষ থেকে ৭ ফেব্রæয়ারি নড়াইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। জিডির প্রেক্ষিতে থানা থেকে মীমাংসার জন্য দুই পরিবারকে ডাকা হলেও সেতুর বাবার বাড়ির লোকজন থানায় হাজির হয়নি। এরপর সেতুর ফুফু সতেজদের এক ভাড়াটিয়ার মোবাইল ফোনে আবারো স্ত্রী সেতুর নামে ফ্লাট কিনে দেয়ার কথা বলে। এছাড়া সেতুর বাবা ১৫ লাখ টাকার দেনা বলেও মোবাইল ফোনে উল্লেখ করেন তিনি (সেতুর ফুফু)। এই দেনার কথা বলেই মোবাইল ফোনে সেতুর ফুফু বলেন, সজীবের মতো জমাই থাকতে…। অন্যথায় সেতু আর স্বামী-সংসার করবে না। এছাড়া বিভিন্ন সময়েও ওই দেনার টাকা (১৫ লাখ) দাবি করে সেতুর বাবা।
এক পর্যায়ে গত ১০ ফেব্রæয়ারি রাতে বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি দুর্গাপুরে ফিরে আসেন গৃহবধূ সেতু। শ্বশুরবাড়িতে কিছুদিন চুপচাপ থাকার পর আবারও নির্যাতনের নাটক সাজাতে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন পরিকল্পনা করেন গৃহবধূ সেতু। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ মার্চ রাত ৯টার দিকে গৃহবধূ সেতু কাউকে কিছু না জানিয়ে তার নিজের কক্ষে প্রথমে কেচি দিয়ে এবং পরে বেøড দিয়ে মাথার সামনের অংশের চুল কেটে ফেলে। এছাড়া তার দু’টি চোখের ব্রæ-ও কেটে ফেলেন তিনি। এ সময় তার স্বামী সজীব মোস্তারী বাইরে ছিলেন। চুল ও ব্রæ কাটার বিষয়টি বাড়ির গৃহপরিচালিকা পলি প্রথমে টের পায়। এরপর বিষয়টি মির্জা গালিব সতেজকে অবগত করে পলি খাতুন। সতেজ পরিবারের সবাইকে অবগত করার পর সেতুর কক্ষে প্রবেশ করেন পরিবারের সদস্যরা। গৃহবধূ সেতুর এই বেগতিক অবস্থা দেখে পরিবারের সদস্যরা সবাই হতবাক হন। সেতুর স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের সদস্যরা তাকে (সেতু) বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির সবাই যে যার কক্ষে ঘুমাতে যান। এরপর বাড়তে থাকে নাটকীয়তার মাত্রাও ! সবাই যখন গভীর ঘুমে, সেই সুযোগে রাতের যে কোনো সময় পুরো মাথা ন্যাড়া করে ফেলে গৃহবধূ সেতু। এরপর শিশু কন্যা রাশাকে নিয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে (১২ মার্চ) খাবার কক্ষের বেসিনে আসেন সেতু। হঠাৎ করে শিশু রাশার কান্না শুনে শাশুড়ি স্বপ্না বেগম তার কক্ষ থেকে বের হয়ে বেসিনে আসেন। পুত্রবধূর পুরো মাথা ন্যাড়া দেখে চিৎকার করে উঠেন শাশুড়ি স্বপ্না বেগম। মাথা ন্যাড়াসহ নানা অপকৌশল কাজে লাগিয়ে গৃহবধূ সেতু শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে দোষারূপের অপচেষ্টা করেন।
মির্জা গালিব সতেজ বলেন, ভাবির (সেতু) অপকৌশল ও ষড়যন্ত্র টের পেয়ে ঘটনার রাতে (১২ মার্চ) আমরা তাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করি। একপর্যায়ে ভাবি স্বীকার করেন, তিনি নিজেই তার মাথার চুল কেটেছেন। এছাড়া অনেক কথোপকথনের ভিডিওচিত্র আমাদের কাছে আছে, যা দেখলে যে কেউই সহজে বুঝতে পারবেন; নিজে মাথার চুল ও ভ্রæ কেটে আমাদের পরিবারকে দোষারূপ করা হচ্ছে। আমরা এ মামলার সঠিক তদন্ত চাই।
সতেজদের প্রতিবেশি আল আমিনসহ অনেকে বলেন, সজীব মোস্তারী যতবারই বিদেশ থেকে দেশে এসেছেন; ততবারই তার বাবাবাড়ির জন্য টাকা দাবি করেন গৃহবধূ জান্নাতারা সেতু। এ নিয়ে সেতু অনেকবার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ওপর চড়াও হয়েছে। এছাড়া গত ১২ মার্চ রাতে গৃহবধূ সেতুর চুল ও ভ্রæ কাটার বিষয়টি নাটকীয়তা ছাড়া কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। আল আমিন আরও বলেন, এর আগেও অনেকবার গৃহবধূ সেতু নিজের শরীরে গরম পানি ঢেলে এবং জীবানুনাশক হারপিক পানের কথা বলে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে বিভিন্ন ধরণের ষড়যন্ত্র করেছেন।
গৃহবধূ জান্নাতারা সেতুর বাবা নড়াইলের কুড়িগ্রাম এলাকার হোসেন ইমাম দাবি করে সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজনই নির্যাতন করেছে।
নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার মশিউর রহমান বাবুসহ দুই চিকিৎসক জানান, জান্নাতারা সেতুর শরীরে ঘুমের ওষুধের কোনো বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তার মাথার চুল ও ভ্রæ কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। তবে হাড়ভাঙ্গা বা মারাত্মক কোনো জখম পাওয়া যায়নি।
নড়াইল সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন পিপিএম বলেন, গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে তিনজনের নামে থানায় মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন আদালতে হাজির হলে, তাদের জামিন মঞ্জুর হয়েছে বলে শুনেছি। অপর আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। #