নড়াইল অফিস :
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের মিঠাপুর-চাকুলিয়ায় বসতবাড়ি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিবেশি জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী সালমা খানমসহ এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী বসতভিটা জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক পরশমণি বিশ্বাস মন্টু। এ ঘটনায় মন্টুসহ তার বয়োবৃদ্ধ মা গৌরি রানী বিশ্বাসকে মারপিট করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১৪৪ ধারা জারির পরও প্রতিপক্ষরা মন্টু বিশ্বাসের বসতভিটায় টিনের বেড়া দিয়ে দখল করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মন্টু বিশ্বাস মতুয়া মিশনের সাবেক যুগ্মমহাসচিব এবং হরি গুরুচাঁদ শিক্ষা সংস্কৃতি গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মিঠাপুর মৌজার চাকুলিয়া গ্রামে কবলা দলিলমূলে ক্রয়কৃত নালিশী ৩৩৯২ দাগের ২৩ শতক জমিতে ৭৫ বছরের বয়োবৃদ্ধা মা গৌরি রানী বিশ্বাসকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস ও ভোগদখল করে আসছেন পরশমণি বিশ্বাস মন্টু। ওই নালিশী জমির উত্তরপাশে প্রতিবেশি জিয়াউর রহমানের বসবাস।
গত ১৭ এপ্রিল বিকেলে জিয়াউর, তার স্ত্রী সালমা ও ছেলে জাহিদ হোসেনসহ ৬ থেকে ৭ জন সংঘবদ্ধভাবে দেশি ধারালো অস্ত্র এবং লাঠি নিয়ে পরশমণি বিশ্বাসের বসতভিটা জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালায়।
বাড়ি দখলের এ অপচেষ্টা প্রতিরোধ করতে গেলে প্রতিপক্ষরা পরশমণি বিশ্বাসসহ তার বয়োবৃদ্ধা মা গৌরি রানী বিশ্বাস, প্রতিবেশী দীন ইসলাম, তার স্ত্রী হালিমা এবং দীন ইসলামের বয়োবৃদ্ধা মা কুলসুম বেগমকে মারপিট করে।
এ সময় গৌরি রানীর রান্নার চুলা ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ করেন তারা। স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার বসতভিটা দখলে সহযোগিতা করছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা। এক পর্যায়ে পরশমণির বসতভিটার উঠানে টিনের বেড়া দিয়ে প্রতিপক্ষরা দখল করে নেয়।
পরেরদিন (১৮ এপ্রিল) নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় মামলা দায়ের হলে বিজ্ঞ বিচারক নলিশী জমিতে শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় ১৪৪ধারা জারির আদেশ দেন। লোহাগড়া থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (এসিল্যান্ড) দখল বিষয়ক তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান এবং দ্বিতীয় পক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন।
মামলার বাদী পরশমণি বিশ্বাস মন্টু বলেন, আদালতের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে প্রতিপক্ষরা আমার জমিতে টিনের বেড়া দিয়েছে। আমাদের মারধর করেছে। এদিকে অভিযুক্তরা বলেন, আমাদের ন্যায্য জমি বুঝে নেয়ার জন্য টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে। আমরা কারোর জমি দখল করিনি। আমাদের নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: নাসির উদ্দিন জানান, নালিশী জমিতে ১৪৪ ধারা জারির পর দুইপক্ষকে সংযত থাকার জন্য বলা হয়েছে। কেউ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।