হোম জাতীয় নড়াইলের কলোড়া ইউপি সদস্য প্রকাশ নারী কেলেংকারী ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া

নড়াইল অফিস :

নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য প্রকাশ বিশ্বাসের হত দরিদ্রদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনার রেশ না কাটতেই তার বিরূদ্ধে নারী কেলেংকারির অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (৯আগষ্ট) স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, একের পর এক নারী কেলেংকারি ও অর্থ কেলেংকারি ঘটিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টিকারি ইউপি সদস্য প্রকাশ সাধু সাজতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এতে করে তার কুকর্মের আরোও অজানা কাহিনী ফাস হয়ে যাওয়ায় এলাকায় হাস্যরস ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

করোনাকালে সরকারের দেয়া নগদ অর্থ বিতরনে কলোড়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বর প্রকাশ বিশ্বাস চরম দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি করেন। কৌশলে নিকট আতিœয়দের নাম দিয়ে টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন। তিনি স্ত্রী, মা, আপন ভাই, মামাত ভাই, শ্যালিকা সহ নিকট আতিœয়দের নাম তালিকাভুক্ত করে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে কলোড়া ইউনিয়নে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে করোনা বিস্তার রোধে গৃহীত লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ এবং বিভিন্ন দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ দরিদ্র ও দুস্থ ৩ শত ৫৬ পরিবারের মাঝে নগদ ১ হাজার টাকা করে বিতরনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কলোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাচ আলী সরদার সকল ইউপি সদস্যদের যথাযথ নিয়ম মেনে নিজ নিজ এলাকার উপযুক্ত ব্যক্তিদের তালিকা জমা দেয়া নির্দেশ দেন।

৭নং ওয়ার্ড মেম্বর প্রকাশ বিশ্বাস সেই নির্দেশ অমান্য করে আত্মীয়স্বজন ও নিজ পরিবারের লোকজনের নাম দিয়ে মাথা প্রতি নগদ ১ হাজার টাকা করে তুলে নিয়েছেন। তার দেয়া তালিকায় রয়েছে ধনী ব্যক্তিদের নাম। নগদ টাকা বিতরনের তালিকায় ২৮৬ নাম্বারে রয়েছে জয়ন্তি বিশ্বাস। তিনি প্রকাশ মেম্বরের স্ত্রী। তালিকার ২৮৯ নাম্বারের স্মৃতি বিশ্বাস মেম্বরের মা।

২৭৪ নাম্বারের বিকাশ বিশ্বাস এবং ২৮৬ নাম্বারের প্রভাত বিশ্বাস মেম্বরের আপন ভাই। তালিকার ২৮০ নাম্বারের শান্তি বিশ্বাস মেম্বরের আপন শ্যালিকা। ২৮২ নাম্বারের শেখর বিশ্বাস ও ২৯৪ নাম্বারের মধুসূদন বিশ্বাস মেম্বরের মামাত ভাই। বিশেষ সম্পর্কের সুবাদে শিল্পী বৈরাগী ও তার স্বামী নিত্যানন্দ বৈরাগী দু’জনেই টাকা পেয়েছেন।

চতুর প্রকাশ মেম্বর গোয়ালবাড়ি গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও আলোমতি রানীর নামের টাকা অন্যদের হাতের টিপ দিয়ে উত্তলোন করে নিয়েছেন। আলোমতি রানী ও শ্রীকান্ত বিশ্বাস আদৌ জানেন না তাদের নামে টাকা এসেছে। মেম্বর প্রকাশ বিশ্বাস নিজ স্ত্রী, মা, আপন ২ ভাই, ২ জন মামাত ভাই, শ্যালিকা সহ নিকট আত্মীয়দের নামে এবং অন্যদের নামের টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন।

মাদকাসক্ত প্রকাশ মেম্বর শুধু অর্থ আত্মসাৎ নয় নারী কেলেংকারিতেও এগিয়ে আছেন। সম্প্রতি গভীর রাতে এলাকার এক বিধবা মহিলার ঘরে উঠে স্থানীয়দের ধাওয়া খেয়ে দৌড়ে পালান। দীর্ঘ দিন যাবত ওই বিধবা মহিলার সাথে তার অনৈতিক সর্ম্পক আছে বলে গুঞ্জণ রয়েছে।

এ রকম নারী কেলেংকারি ও মাদকের অসংখ্য ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা এলাকাবাসির মুখে মুখে। ইউপি সদস্য হওয়ার পরও তার নারী আসক্তি যায়নি। বরং বেড়েছে। ক্ষমতার দাপটে মদ্যপ অবস্থায় যা খুশি তাই করেন। একের পর এক অপকর্ম করে নিজের অপরাধ ঢাকতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তার এহেন অপতৎপরতায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসি ফুসে উঠেছেন। তারা তদন্তপূর্বক দুর্নীতিবাজ প্রকাশ ম্বেরের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে প্রকাশ মেম্বরের নিকট জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন,প্রশাসনের নিদের্শে ৩ জনের টাকা ফেরত দিয়েছেন। আর নারী কেলেংকারির অভিযোগ ষড়যন্ত্রমুলক। তাই সংবাদ সম্মেলন করে এলাকার লোকজনদের জানিয়ে দিয়েছেন ভবিষ্যতে আর কোন অপকর্ম করবেন না।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন