হোম জাতীয় ন্যূনতম সংস্কার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: ড. তোফায়েল আহমেদ

ন্যূনতম সংস্কার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: ড. তোফায়েল আহমেদ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 13 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
ন্যূনতম সংস্কার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. তোফায়েল আহমেদ।

রবিবার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদ আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য-বিরোধ সুরাহার পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবাই রাষ্ট্র ও সমাজের ভালো চাই। এটা আমাদের ঐক্যমতের ভিত্তি। আমার মনে হয়েছিল আমার জীবদ্দশায় শেখ হাসিনার পতন দেখতে পারবো না। কী থেকে কী হয়ে গেলো, এটা কেউ ভাবতে পারেনি। মা তার সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। আমরা দীর্ঘদিন মুখ বন্ধ করে ছিলাম। এখন সেই বাধামুক্ত। আমরা এখন কথা বলতে পারছি। কিন্তু তার মানে এই নয়, যা ইচ্ছা তাই বলতে হবে। যারা নীতি নির্ধারণে আছেন তাদের সব কিছু নিয়েই ভাবতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে একজন আইনজীবীকে রাস্তায় মেরে ফেলা হয়েছে। চট্টগ্রামবাসী সব মন্দির জ্বালিয়ে দিলে কী হতো? কিন্তু কিছু হয়নি। এটাই জাতির ম্যাচিউরিটি। গণতন্ত্রের চর্চা থাকলে সবার কথা বলা যাবে, সবাই ভালো থাকবে। গণতন্ত্র না থাকলে কিছুই থাকবে না। শুধু অর্থনীতি দিয়ে দেশ চলে না। দেশ চালাতে হলে রাজনৈতিক অর্থনীতি দরকার। অর্থনীতি ও রাজনীতির মেলবন্ধন লাগে।’

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে বলা হয়- সংস্কার রাজনৈতিক সরকার করবে। কিন্তু যে অবস্থায় ছিলাম আমরা তা থেকে একটা জায়গায় পৌঁছাতে কিছুক্ষেত্রে অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। নির্বাচন অবশ্যই দরকার। নির্বাচনের জন্যই এত কিছু হয়েছে। ন্যূনতম সংস্কার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব না।’

তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালে সংস্কার হয়েছে? যারা সংস্কার চেয়েছিল, তারা পার্টি থেকে বাদ হয়ে গিয়েছিল। ‘সংস্কারপন্থি’ গালি হয়ে গিয়েছিল। তারা সংস্কার করতে গিয়ে মাইনাস টু করতে চেয়েছিল।’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘রাজনীতিকরা দেশ চালাতে পারবে, কিন্তু আপনারা গণতন্ত্র পাবেন না। তাই একটু ধৈর্য ধরতে হবে। সংস্কার কমিশন শিগগিরই রিপোর্ট দেওয়ার কথা। তিন মাসের মধ্যে একটা পর্যালোচনা হোক। এখন কী করা যায়, নির্বাচিত সরকার কী কী করবেন- এগুলোর তো ধারাবাহিকতা লাগবে।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা সাইফুল হক বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমান পরিস্থিতি একা সামাল দিতে পারবে না। তাই সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র-শক্তি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার ছাড়া আমরা সামনে এগোতে পারবো না। আগামী জানুয়ারির মধ্যে যদি প্রয়োজনীয় সংস্কার করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদায় নিতে পারে, তাহলে এটা হবে তার সবচেয়ে বড় সাফল্য।’

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ‘কীভাবে আমরা বহু মতাদর্শের মধ্যকার বিরোধ নিরসন করতে পারি এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ থাকবে কিনা এমন প্রশ্নগুলোর সুরাহা করতে গেলে মতাদর্শগুলো মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যাবে কিনা আমরা জানি না। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো বক্তব্য দিতে শুরু করেছে। কেউ বলছে বেশি সময় নেন, কেউ বলছে দ্রুত নির্বাচন দেন। এই অবস্থায় সংবিধান, নির্বাচনের প্রশ্নে বিরোধ অবশ্যই হবে। অর্থাৎ সংস্কারের জায়গাটা আমরা তৈরি করতে পারছি না।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের সভাপতি শেখ আব্দুন নুর।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন