ঝালকাঠিতে চলন্ত লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৪০ জনের মৃত্যু,আরও প্রাণহানির শঙ্কা-আহত প্রায় দুই শতাধিক
কঞ্জন কান্তি চক্রবর্তী, ঝালকাঠি :
নদীতে ভাসমান অবস্থায় ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড,দগ্ধ ১২০ জন বরিশাল ও ঝালকাঠি হাসপাতালে ভর্তি,গুরুতর অগ্নিদগ্ধ ২ জন শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি,৭ সদস্যোর তদন্ত কমিটি গঠন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের,নিহতদের বেশির ভাগই বরগুনার বাসিন্দা,লঞ্চটি কিছুদিন আগে মেরামত করা হয়েছিলো। লঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা করে দেওয়া হবে এবং একই সঙ্গে লাশ দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে আরও ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ ঘটনায় রাষ্টপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র শোক প্রকাশ করেছেন ।
কঞ্জন কান্তি চত্রæবর্তী,ঝালকাঠি থেকে ঃ ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার সুগন্ধা নদীর গাবখান চ্যানেলে এই দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দুই শতাধিকের বেশি যাত্রী আহত হয়েছে। অগ্নিকান্ডে দগ্ধ ৯৫ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ৪০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখনো নিখোঁজ অনেকে,তাদের সন্ধানে নদীর তিরে অপেক্ষা করছেন স্বজনরা। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি ঘঠন করা হয়েছে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্টপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
লঞ্চের যাত্রী সোলাইমান আকন বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দে লঞ্চে আগুন ধরে যায়। লঞ্চের পেছনের অংশ থেকে তৃতীয় তলার সামনে পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।’
সাইদুল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী জানান, প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই লঞ্চ থেকে নদীতে লাফ দেন।
এই লঞ্চে ৫ শতাধিক যাত্রী ছিল বলে জানান কেবিন বয় ইয়াসিন। তিনি বলেন, ‘ওপরে থাকা বেশির ভাগ যাত্রী নদীতে লাফ দিয়েছে। ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল হক জানান, ৯৫ জনের বেশি দগ্ধ যাত্রীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দ্বায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত দগ্ধ আট শিশুসহ ৬৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে এসেছেন। লঞ্চ দুর্ঘটনার স্থান পরিদর্শন শেষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে লাশ দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে আরও ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠির নলছিটির সুগন্ধা নদীর পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় লঞ্চ দুর্ঘটনার স্থান পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, লঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্তে জন্য একজন যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।