হোম জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে রেকর্ডসংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক

নির্বাচন পর্যবেক্ষণে রেকর্ডসংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 61 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের অংশগ্রহণ এবার বড় পরিসরে হতে যাচ্ছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণে শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক বাংলাদেশে আসতে পারেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, ২০০৮ সালের পর এটিই হতে যাচ্ছে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সর্বোচ্চ উপস্থিতিসম্পন্ন নির্বাচন।

ইসি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই), কমনওয়েলথসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্ত হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকেও আলাদা আলাদা পর্যবেক্ষক দল আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে বড় দলটি পাঠাচ্ছে ইইউ। ২৭ দেশের এই জোট থেকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি মিলিয়ে প্রায় ১৫০ থেকে ১৮০ জন পর্যবেক্ষক বাংলাদেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৫০ সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল আসতে পারে, যার নেতৃত্বে থাকবে আইআরআই। এ ছাড়া কমনওয়েলথের প্রতিনিধিদলে থাকতে পারেন প্রায় ৩০ জন পর্যবেক্ষক।

ইতিমধ্যে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে প্রতিনিধিদল পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে চিঠি পাঠানো শুরু করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এর অংশ হিসেবে ইউরোপীয় কমিশনের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তানীতি বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি কাজা কালাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থা এবং দেশগুলোকেও এ ধরনের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। সরকার চায় না এমন কোনো পর্যবেক্ষক আসুক, যাদের উপস্থিতি অযথা বিতর্কের সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি আরও জানান, গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রাক্-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশ সফর করেছে। সে সময় তারা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবে আইআরআই। ওই দলে আইআরআই ও এনডিআই ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর, কংগ্রেস সদস্য এবং সাবেক সরকারি কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।

ইইউর পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন ১১ ডিসেম্বরই ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজা কালাসকে চিঠি পাঠান সিইসি। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

চিঠিতে আরও বলা হয়, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ভোটারদের আস্থা বৃদ্ধির পাশাপাশি নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও ফলাফলের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নির্বাচন প্রস্তুতি থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণ, গণনা ও ভোট-পরবর্তী সব ধাপ পর্যবেক্ষণে ইইউর প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানানো হয়।

ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মাসুদ আলম বলেন, গত সেপ্টেম্বরে ইইউর প্রাক্-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের দেওয়া মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এবার বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার সম্প্রতি জানান, ২০০৮ সালের পর এই প্রথম ইইউ বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে। এ দলে ১৫০ থেকে ২০০ সদস্য থাকতে পারেন। তাদের একটি অংশ ভোটের প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে এবং বাকিরা ভোটের এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন। ভোট চলাকালে স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগেও ইইউ সহযোগিতা করবে।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫৯৩ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক অংশ নিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, ১৭ বছর পর আবারও বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বড় উপস্থিতির মধ্য দিয়ে একটি জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন