জাতীয় ডেস্ক:
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা স্থগিত রাখতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
শনিবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ ও ১ দফা যুগপৎ আন্দোলনের দাবিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, বিরোধী দলের ওপর ক্ষমতাসীনদের দমন নিপীড়ন প্রমাণ করে তাদের রাজনৈতিক পরাজয় ঘটেছে। আওয়ামী লীগের নৈতিক মৃত্যু ঘটেছে।
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, এতো উন্নয়ন হলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিচ্ছে না কেন। লক্ষ্মীপুরে নির্বাচন প্রমাণ করেছে ভোট কতটা সুষ্ঠু হবে। ইসি বলেছে নির্বাচন করা সম্ভব কিনা তা নিশ্চিত না। ২০১৪-১৮ সালের মত সাজানো একতরফার নির্বাচন দেশের জনগণ হতে দেবে না। ট্রেন লাইনই নাই, চলবে কিভাবে।
ইসির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তফসির ঘোষণা স্থগিত রাখুন। অবরোধ চলাকালে নাশকতার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করুন বেরিয়ে আসবে কে করছে এসব। পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ডাক এসেছে বলেও জানান।
সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এমন মন্তব্য করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, যতই বাধা বিপত্তি আসুক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। রাজপথ থেকে পিছু হটার আর সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শাসককে বিশ্বাস করা ভুল ছিলো। সুকৌশলে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ পণ্ড করেছে। এ সরকারকে বিশ্বাস করা যাবে না। যতই বাধা বিপত্তি আসুক কর্মসূচি চলমান থাকবে। দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার আর আওয়ামী লীগের আমলারা।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারের তল্পিবাহক। এই কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় এ কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগকে সব বিরোধী দলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক রূপরেখা নির্ধারণের দাবি জানান জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব তমিজউদদীন টিটুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন— বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান এবং ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীর প্রতীক), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নুর, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, আমার বাংলাদেশ পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা শওকত আমিন, মাওলানা আবদুল করিম, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আইনজীবী মুজিবুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামী বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী জাকির হোসেন খান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব।
প্রসঙ্গত লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের শূন্য পদে উপনির্বাচনে ব্যালট বইয়ে নৌকা মার্কায় অনবরত সিল মারার ঘটনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজাদ হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শনিবার ১১ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ, ৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজাদ ব্যালট বইয়ে নৌকা মার্কায় অনবরত সিল মারেন। এ ঘটনার ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায় আজাদ একাই ব্যালট বইয়ে নৌকা মার্কায় ৪৩টি সিল মারে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখেছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পৃথকভাবে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে ইসিসহ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।