বাণিজ্য ডেস্ক :
দেশের অঞ্চলভেদে নারী পোশাক শ্রমিকদের মজুরিতে ৫১ থেকে ৬০ শতাংশ বৈষম্য রয়েছে। এমন চিত্রই উঠে এসেছে ঢাকাসহ দেশের পাঁচটি প্রধান শিল্প এলাকার পোশাক শ্রমিকদের ওপর পরিচালিত এক সমীক্ষায়।
যৌথভাবে সমীক্ষাটি চালিয়েছে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকনোমিক মডেলিং (সানেম) এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা মাইক্রোফাইন্যান্স অপরচ্যুনিটিজ (এমএফও)। সম্প্রতি ‘লিভিং ওয়েজ, লিভিং প্লানেট: সেপ্টেম্বর ২০২২ আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে সানেম।
প্রতিবেদনটিতে দেখা গেছে, দেশে বিভিন্ন অঞ্চলের নারী পোশাক শ্রমিকদের মজুরিতে পার্থক্য রয়েছে ৫১ থেকে ৬০ শতাংশ। নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের মজুরিতেও রয়েছে বিস্তর ফারাক।
অঞ্চলভেদে পুরুষ পোশাক শ্রমিকদের মজুরির পার্থক্য ৪৫ থেকে ৫৪ শতাংশের মধ্যে রয়েছে বলে জানায় সানেম।
‘গার্মেন্ট ওয়ার্কার ডায়ারিজ’ প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া এই গবেষণায় প্রতি সপ্তাহে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং সাভারের ১ হাজার ৩০০ জন নির্বাচিত গার্মেন্টসকর্মী অংশ নেন।
সানেমের তথ্যমতে, গবেষণায় অংশ নেয়া পোশাক শ্রমিকদের ৪ ভাগের ৩ ভাগই নারীকর্মী। অঞ্চলভেদে এসব কর্মীর মজুরির পার্থক্য ৯ হাজার ৪০৮ টাকা। ওভারটাইম বাদে এপ্রিল-জুনের মধ্যে নারী শ্রমিকদের গড় আয় ছিল ৯ হাজার ৬৬৯ টাকা।
গবেষণায় নারী পোশাক শ্রমিকদের পাশাপাশি পুরুষদের মজুরিতেও পার্থক্য উঠে এসেছে। অঞ্চলভেদে পুরুষকর্মীদের মজুরির পার্থক্য ৭ হাজার ৯৪৭ থেকে ১৪ হাজার ৪০০ টাকা। ওভারটাইম বাদে এপ্রিল-জুনের মধ্যে তাদের গড় আয় ছিল ১০ হাজার ৯২৮ টাকা।
তবে মানসম্মতভাবে জীবনধারণের জন্য এই বেতন পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন সানেমের গবেষকরা। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পোশাক শ্রমিকদের জীবনমানের ব্যয় মেটানোর জন্য ন্যূনতম মজুরির একটি কাঠামোও সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
সানেমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকায় জীবনযাপনের জন্য শ্রমিকদের মজুরি ১৯ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২২ হাজার ৯০০ টাকা হওয়া দরকার। এছাড়া চট্টগ্রামের শ্রমিকদের ২১ হাজার ৩০০ থেকে ২৬ হাজার টাকা এবং নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভারের জন্য ১৯ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২২ হাজার ৯০০ টাকা মজুরির সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।