হোম খুলনাসাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ‘মব করে’ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদত্যাগ পত্র ছিড়ে ফেলে শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত

নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ‘মব করে’ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদত্যাগ পত্র ছিড়ে ফেলে শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 46 ভিউজ
নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে মব সৃষ্টি করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বহস্তে লেখা পদত্যাগ পত্র হামলা করে ছিড়ে ফেলাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা নিগ্রহের শিকার হওয়ার ঘটনার অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করা হয়েছে এবং এঘটনায় অভিযোগের সাক্ষীসহ উপস্থিত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষী ও শিক্ষকদের সাক্ষগ্রহণে নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাজমা সুলতানা ও শিক্ষক কবির আহমেদ এর বিরুদ্ধে মব সৃষ্টি করা এবং হামলা করে বিদ্যালয়ের সভাপতির পদত্যাগ পত্র ছিড়ে ফেলার ঘটনায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবুল হোসেন। মব সৃষ্টি করে হামলা ও নিগ্রহের শিকার নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা নাজমুল লায়লাা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, গত ইংরেজি ১১/০৯/২০২৫ তারিখ বৃহস্পতিবার বিকালে নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির সভাপতিত্বে ম্যানেজিং কমিটির এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশা অনুযায়ী কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক ব্যক্তি সভাপতি থাকতে পারবেনা বিধায় ঐ সভায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করতে স্বহস্তে লেখা একটি পদত্যাগ পত্র উপস্থিত সকল শিক্ষকের সামনে পড়ে শোনান। পরে পদত্যাগ পত্রটি আমার হাতে দিয়ে চলে যান। আমি তাকে পদত্যাগ না করতে বলি এবং আমি প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে তার পিছু নেয় এবং তাকে ডাকতে থাকি। কিন্তু তিনি পিছনে ফিরে তাকাননি। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাজমা সুলতানা উস্কানীদাতা শিক্ষক কবির আহমেদ এর নির্দেশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাকে পিছন দিক থেকে আক্রমণ করে চেপে ধরে এবং আমার দুই হাত মুচড়ে দিয়ে পদত্যাগ পত্রটি ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে। ঠিক সেই মুহূর্তে বিদ্যালয়ের পুরুষ শিক্ষক কবির আহমেদ সজোরে আমার হাত থেকে লিখিত পদত্যাগ পত্রটি কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় আমি শিক্ষিকা নাজমা সুলতানা ও কবির আহমেদ গণের আক্রমণ হতে পরিত্রান পেতে চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের আক্রমণে আমার চশমা ভেঙ্গে যায়। কোন মতে তাদের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে সভাপতির উদ্দেশ্যে যেতে থাকি। কিন্তু তার কাছে পৌঁছাতে পারিনি। পরে সভাপতির মোবাইলে প্রতিকার চেয়ে ফোন করি। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। আমি এ সময় নিরাপত্তাহীনতার কারণে অসুস্থতা অনুভব করি। বিদ্যালয়ের জল্লাদ শিক্ষিকা নাজমা সুলতানা ও হিং¯্র প্রকৃতির শিক্ষক কবির আহমেদ বিদ্যালয়ে সবার সামনে আমাকে লাঞ্ছিত করেছে। এ সময় বিদ্যালয়ের আর এক শিক্ষক এম এম নওরোজ সভাপতির পদত্যাগ বিষয়ে আমাকে দায়ী করে খারাপ ভাষায় কটুক্তি করে। যা খুবই নিন্দনীয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাজমা সুলতানা ও শিক্ষক এম এম নওরোজ সভাপতি পদত্যাগকে কেন্দ্র করে তার পক্ষ নিয়ে আমার সাথে যে সহিংস ও অমানবিক আচরণ করেছেন। এবিষয়ে ঐ মব সৃষ্টিকারী বিদ্যালয়ের ষড়যন্ত্রকারী দোষী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত করে উপযুক্ত বিচার করে দৃষ্ট্রান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন সিনিয়র শিক্ষিকা নাজমুল লায়লা।
এবিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবুল হোসেন বলেন, আমি অভিযোগের সাক্ষী ও শিক্ষকদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ঐ তিন জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। তবে অভিযুক্ত ২জন শিক্ষক একজন ঢাকাতে অবস্থান করছেন আর একজন অসুস্থ্য। এজন্য তাদের বক্তব্য নেওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবো জেলা অফিসে।
এব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তাজকিন আহমেদ চিশতির মোবাইলে ফোন দিলে তার ব্যবহারিত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ অভিযোগ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মালেক গাজী বলেন, নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বহস্তে লেখা পদত্যাগ পত্র হামলা করে ছিড়ে ফেলাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা নিগ্রহের শিকার হওয়ার ঘটনার অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত হয়েছে এবং এঘটনায় অভিযোগের সাক্ষীসহ উপস্থিত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লিখিত পদত্যাগ পত্র প্রধান শিক্ষকের হাতে না দিয়ে সহকারি সিনিয়র শিক্ষিকার হাতে দিলেন এবং শিক্ষিকা নাজমা সুলতানা এবং শিক্ষক কবির আহমেদ পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা করে পদত্যাগ পত্র ছিড়ে ফেলা বিশাল একটি গভীর ষড়যন্ত্র। ঐ অভিযুক্ত শিক্ষকদের ষড়যন্ত্রের কারণে বিদ্যালয়ের ফলাফল ও সুনাম নষ্ট হচ্ছে। তারা বিদ্যালয়ের কোন নিয়ম-নীতি মানছেনা এবং অশান্তি সৃষ্টি করছে। যা অজানা এক ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন