নড়াইল প্রতিনিধি:
নড়াইলের নড়াগাতি ও কালিয়া থানায় দায়ের হওয়া চারটি গুরুত্বপূর্ণ ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য পুলিশের করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সংশ্লিষ্ট আমলী আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নড়াগাতি থানার জি আর মামলা নম্বর ৬৩/২৪ ও ৬১/২৪, এবং কালিয়া থানার জি আর মামলা নম্বর ১২৪/২৪ ও ১৪৩/২৪—এই চারটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা পৃথকভাবে আদালতে আবেদন জানান। আবেদনে তারা উল্ল্যেখ করেন, তদন্তের স্বার্থে সুনির্দিষ্ট আসামি নড়াইল–১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তি বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে আটকাদেশ (রিমান্ড) চাওয়া প্রয়োজন।
উভয় পক্ষের শুনানি ও মামলার প্রাথমিক তথ্য–প্রমাণ পর্যালোচনা শেষে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তদন্তকারী কর্মকর্তাদের আবেদন মঞ্জুর করে গ্রেপ্তার দেখানোর অনুমতি দেন এবং আসামিকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ঢাকা থেকে নড়াইলে আনা হয় এমপি মুক্তিকে , এর আগে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে প্রিজন ভ্যানে করে বিশেষ নিরাপত্তায় তাকে নড়াইল জেলা কারাগারে আনা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৫ অক্টোবর) আদালতে হাজির করার জন্যই তাকে ঢাকা থেকে নড়াইলে আনা হয়। এর আগে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর নিকেতন এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বি এম কবিরুল হক মুক্তি বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে। এরপর থেকে তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন।
নড়াইল জেলার বিভিন্ন থানায় দায়ের করা নাশকতা ও সহিংসতার মামলাগুলোতে হাজিরা দেওয়ার প্রয়োজন হওয়ায় কারা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের সমন্বয়ে তাকে নড়াইল আনা হয় ।
বি এম কবিরুল হক মুক্তি নড়াইলের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম, ২০১৮ সালের একাদশ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নড়াইল–১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর আইনি প্রক্রিয়া অনুসারে আদালতে হাজিরা নিশ্চিত করতে সব ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কিংবা এমপি মুক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে আদালতের এই আদেশের মাধ্যমে মামলাগুলোর তদন্ত কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।