হোম আন্তর্জাতিক ধ্বংস হওয়া সাবমেরিনটির লাইসেন্স ছিল না

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

আটলান্টিকের তলদেশে পর্যটকদের নিয়ে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিন টাইটানের ছিল না কোনো সনদ। বিষয়টি আগে স্বীকার করলেও নিয়মিতই পর্যটকদের নিয়ে সাগরে ডুব দিচ্ছিল টাইটান। খবর বিবিসির।

আটলান্টিক সাগরের সাড়ে ১২ হাজার ফুট নিচে দুই টুকরো হয়ে পড়ে থাকা বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজ দেখার আগ্রহ আছে অনেকেরই। তবে সেই সাধ পূরণে সাগরের অতলে যেতে হলেও গুনতে হয় আড়াই কোটি টাকা।

বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ করলেও পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে মোটেও ভাবেনি নিউফাউনল্যান্ড ভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওশানগেইট। সাগরে পর্যটকদের নিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর সাবমেরিনটির নানা ত্রুটির কথা সামনে আসছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানায়, ২০১৮ সালে সাবমেরিনটির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানান বিশেষজ্ঞরা। সাগর তলে ঘুরে আসা পর্যটকরা বলছেন, পুরো অভিযানটিই খুব বিপজ্জনক। এর আগেও একবার গভীর সাগরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটে অভিযানে। তবে সেবার রক্ষা পান পর্যটকরা।

বিশেষজ্ঞরা জানান, সাগরের গভীরে ডুব দিতে হলে যেকোন সাবমেরিন কিংবা ছোট সাবমারসিবলের বিভিন্ন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেগুলো পাস করলে দেয়া হয় নিরাপত্তা সার্টিফিকেট।

তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে সাগরের ডুব দিতে সক্ষম দাবি করা টাইটান সাবমারসিবলের ছিল না কোনো সনদ। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ২০১৯ সালে বিষয়টি স্বীকার করলেও কোন সদুত্তর দেয়নি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওশান গেট। উল্টো চালিয়ে গেছে সব কার্যক্রম।

সাগরের ৪ হাজার মিটার গভীরতায় ডুব দেয়ার সক্ষমতা আছে বিশ্বের মাত্র ১০টি সাবমারসিবলের। টাইটান তাদের মধ্যে একটি হলেও এর কোন সার্টিফিকেট ছিল না। এই খাতের বিশেষজ্ঞরা আগেই এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। এটা খুই বিপজ্জনক।

শুধু বিশেষজ্ঞরাই নন, টাইটানের গভীর সাগরে ডুব দেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এর আগের অভিযানে যাওয়া পর্যটকরাও। মেক্সিকান এক পর্যটক নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, টাইটানের মত ছোট ডুবোযান নিয়ে সাগরের এত গভীরে যাওয়া খুবই বিপজ্জনক।

টাইটানে ভ্রমণ করা এক যুবক জানায়, সাগরের নিচে যাওয়ার পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে কিছুক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। নির্দিষ্ট সময় পরও যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল না হলে অভিযান বাতিল করতে হয়। সেবার সাগরের ১ হাজার মিটার গভীরে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন আমরা অভিযান বাতিল করে উপরে উঠে আসি।

এতসব অভিযোগ থাকার পরেও টাইটানে কোন নিরপত্তা ত্রুটি নেই বলে শুরু থেকেই দাবি করে আসছে ওশান গেইট। বরং এর সাহায্যে গভীর সাগরে যাওয়াকে নিরাপদ উল্লেখ করেই প্রচারণা চালায় প্রতিষ্ঠানটি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন