নিজস্ব প্রতিনিধি:
দেবহাটা সরকারি বি.বি.এম.পি. ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পালের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও অন্যান্য শিক্ষকসহ অবিভাবকদের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথকভাবে বাদী হয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পালের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মদন মোহন পাল বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের ছত্রছায়ায় অর্থ আত্নসাৎ করার পাশাপাশি নানা অনিয়ম জড়িয়ে পড়েন। সাবেক সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক যোগসাজোশে স্কুল গেটের সামনে বিদ্যালয়ের ফান্ডের নাম করে দোকান তৈরীর পর ভাড়ার টাকা আত্মসাত ও দোকানের একটি অংশ সাবেক সভাপতির দখলে রাখা হয়েছে।
এছাড়া স্কুল গেটের সামনেই গড়ে তোলা ওই দোকানের ছাউনি সরকারী রাস্তার পাশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়ায় স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রাস্তা দেখতে না পেয়ে মাঝে মধ্যেই সড়ক দূর্ঘটনার কবলে পড়ছেন। পাশাপাশি কালো টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী ফারুকের সহযোগীতায় দোকানের ভিতর আরও একটি আন্ডারগ্রাউন্ড ঘর নির্মান করা হয়েছে। যেখানে স্কুলের তরুন-তরুনীদের প্রায়ই দেখা যায় আড্ডারত অবস্থায়।
শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ের পিছনের অংশ দিয়ে দীর্ঘদিনের মানুষের চলাচলের একটি পথ ছিল। কিন্তু সেটিও সভাপতি নজরুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পাল বন্ধ করে সেখানে একটি দোকান ঘর নির্মান করে। পরে সেটিও বিনা পয়সায় ভাড়া নেয়ার নাম করে প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় নিজের পৈত্রিক সম্পত্তির মতো ভোগদখল করে আসছে সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম। এমনকি মদন মোহন পালের নিষ্ক্রিয়তাকে পুঁজি করে বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে বাথরুম নির্মানসহ ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন ওই সাবেক সভাপতি। যা সম্পূর্ন অবৈধ।
লিখিত অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরীর সহযোগীতায় রাতেও স্কুলের ওই দোকান ঘর নামক অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চলছে অনৈতিক কর্মকান্ড। যার স্থানীয় বহু প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী রয়েছে বলেও উল্লেখ রয়েছে লিখিত অভিযোগে।
অন্যদিকে স্কুলটি সরকারি করণের নাম করে অন্যান্য শিক্ষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা তুলে আত্নসাৎ করা এবং বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে মদন মোহন পালের বিরুদ্ধে। এঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আরমান হোসেন বাদী হয়ে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিক্ষা কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
আরমান হোসেন জানান, একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে স্কুলটিতে চলমান দূর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ লোপাট ও অনৈতিক কর্মকান্ডের ঘটনায় আমি ব্যাথিত। যখন বিদ্যালয়টির এমন অবস্থা দেখি তখন খুব কষ্ট লাগে। বিষয়গুলো সমাধানের জন্য একাধিকবার প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পালকে বলা হলেও, তিনি আমাদের কথার কোন মুল্যায়ন করেননি। সাবেক সভাপতির ছত্রছায়ায় থেকে বিদ্যালয়টিকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক।
তাই বাধ্য হয়ে প্রতিকারের আশায় প্রানপ্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের শরনাপন্ন হয়েছি।এদিকে এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পাল মোবাইলে জানান, আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানিনা।