দেবহাটা প্রতিনিধি:
দীর্ঘদিনের দ্বিধা-বিভক্তি ভুলে সাংবাদিকদের বৃহৎ স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যখন ব্যালটের মাধ্যমে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে পূর্বের সকল কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষনা করে দেবহাটা প্রেসক্লাবের মুলধারার সকল সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন ও নির্বাচনের তফশিল ঘোষনা করেছেন, ঠিক তখনই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নির্বাচনকে বানচাল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেবহাটার কয়েকজন চিহ্নিত বিএনপি ও শিবির ক্যাডার।
যাদের নেতৃত্বে রয়েছেন পারুলিয়াতে বসবাসরত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিবির ক্যাডার, চিহ্নিত একজন মাদক সেবী ও সহিংসতাকালীন নেতৃত্বে থাকা বিএনপির দুই নেতা।
গেল বছর ওই শিবির ক্যাডারের নেতৃত্বে পারুলিয়া ফুটবল মাঠে মাহফিলের নামে জামায়ত-শিবিরের কয়েকশ নেতাকর্মীদের নিয়ে সরকার বিরোধী কার্যক্রম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও উষ্কানিমুলোক বক্তব্য দেয়ার সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি’র সাথে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে পৌঁছালে ওই শিবির ক্যাডার ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এছাড়াও সহিংসতাকালীন নাশকতায় নেতৃত্ব দেয়ার পাশাপাশি অদ্যবধি জামায়তের সকল কার্যক্রম পরিচালনা এবং সহিংস শিবির ক্যাডারদের একটি সক্রিয় গ্রুপ পরিচালনা করছে ওই শিবির ক্যাডার।
ওই শিবির ক্যাডারের সাথে প্রেসক্লাবের নির্বাচন ঘিরে সহিংসতাকালীন নানা নাশকতা কর্মকান্ডে নেতৃত্বে থাকা চিহ্নিত দুই বিএনপি নেতাও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নাশকতা, চাঁদাবাজী, সরকারী গাছকাটা, ধর্ষনসহ একাধিক মামলা। রয়েছে সরকারী দপ্তরে চাদাবাজি ও দালালির একাধিক অভিযোগ। সম্প্রতি ওই ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়েছে নাশকতার দুই ডজন মামলার আসামী সখিপুরের ময়নুদ্দীন ময়না চেয়ারম্যানের ভগ্নিপতি অপর এক শিবির ক্যাডার। তৎকালীন সময়ে ময়না চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে যখন দেবহাটা জুড়ে তান্ডব চালানো হয়, সেসময়ের ময়না চেয়ারম্যানের সাথে সকল নাশকতা কর্মকান্ড চালায় ওই শিবির ক্যাডার। ষড়যন্ত্র জোরদার করতে এদের সঙ্গী হয়েছে পারুলিয়ার চিহ্নিত এক মাদকসেবী।
তার বিরুদ্ধেও রয়েছে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজী, বিনা পয়সায় ফেন্সিডিল ও গাঁজা সেবনের জন্য মাদক কারবারীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া, চিটারী, বাটপারীসহ বহু অপকর্মের অভিযোগ। কিছুদিন আগেই ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় ফেন্সিডিল সেবনের সময় বিজিবি সদস্যদের হাতে গ্রেপ্তার পরবর্তী পুকুরের পানিতে চুবুনিসহ বিজিবির বেদম মারপিটের শিকার হয় ওই মাদকসেবী। পরে তার পরিবারের অনুরোধে সাবেক দেবহাটা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব আলম খোকন বিজিবি’র কাছ থেকে ওই মাদকসেবীকে ছাড়িয়ে আনেন।
এসকল ষড়যন্ত্রকারীদের অধিকাংশরাই প্রত্যক্ষভাবে বিএনপি ও জামায়ত শিবিরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ও সক্রিয়। বর্তমানেও বিভিন্ন সময়ে দেবহাটা উপজেলা অভিমুখের ছফেদা তলার একটি চায়ের দোকানে, পারুলিয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন চটপটির দোকানের সামনে প্রকাশ্যে সরকার বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখলে এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সাংবাদিকদের স্বীকার করতে রীতিমতো তাদের গাত্রদাহ হয়। তারা প্রেসক্লাবটিকেও বিএনপি জামায়তের আঁখড়া হিসেবে গড়ে তুলতে মরিয়া।
যখনই সকল ভেদাভেদ ভুলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিশ্বাসী ও স্বাধীনতা স্বপক্ষের সাংবাদিক নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্নের জন্য ব্যাপক পরিশ্রম, ত্যাগ স্বীকার ও আহ্বায়ক কমিটির অধীনে নির্বাচনী তফশিল ঘোষনা করেছেন, ঠিক তখনই আবারো সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে মাথাচাড়া দিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিএনপি, জামায়ত ও শিবিরের চিহ্নিত সশস্ত্র এসব ক্যাডাররা।
তবে এসকল ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহতসহ দাতভাঙা জবাব দিতেও ঐক্যবদ্ধ রয়েছে দেবহাটা প্রেসক্লাবের সংবাদকর্মীরা।
উল্লেখ্য যে, দীর্ঘদিনের ভেদাভেদ ভুলে সাংবাদিকদের বৃহৎ স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে গত বৃহষ্পতিবার পূর্বের সকল কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষনা করে রেজুলেশনের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাবকে আহ্বায়ক ও নির্মল মন্ডলকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন দেবহাটা প্রেসক্লাবের মুলধারার ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের সাংবাদিকরা। পরবর্তীতে শনিবার প্রেসক্লাবের হলরুমে আহ্বায়ক কমিটির সভায় আগামী ১ অক্টোবর নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করে নির্বাচনের তফশিল ঘোষনা করে আহ্বায়ক কমিটি।