আব্দুল্লাহ আল মামুন:
সাদা সোনা খ্যাত দেবহাটায় রপ্তানিযোগ্য চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশের ঘটনা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। পুশ যেনো ব্যাবসায়ীদের নেশায় পরিনত হয়েছে, আজও দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া মৎস্য সেডে খেজুরবাড়িয়া গ্রামের মৃত হারান গাজীর ছেলে রবিউলের মাছের ঘরে অভিযান চালিয়ে পুশ করা অবস্থা প্রায় ৪০ কেজি মাছ জব্দ করেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসাদুজ্জামান এক ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ওই ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং মাছ গুলা কে উদ্ধার করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এলাকায় বিনষ্ট করা হয়েছে, এই সময় উপস্থিত ছিলেন দেবহাটা থানার এস আই তাজুল ইসলাম দেবহাটা উপজেলার জামাতের ইউনিট সদস্য জিয়াউর রহমান জিয়া, বিএনপি নেতা আকবার আলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বেঞ্চ সহকারি সাদেক হোসেন সহ মিডিয়া কর্মীরা, গত এক মাসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে টিকেট,পারুলিয়া, গাজিরহাটে মোট ৫ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে তার পরেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ। অপদ্রব্য পুশ বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান নিয়মিত পরিচালিত হলেও, বেশির ভাগ সময়ে অপদ্রব্য পুশকৃত গলদা ও বাগদা চিংড়ির চালান প্রশাসনের নাগাল টপকে রপ্তানি হচ্ছে এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। এতে করে দিন দিন বিশ্ববাজারে সুনাম ও ঐতিহ্য হারাচ্ছে সাতক্ষীরার চিংড়ি। মাঝেমধ্যে রপ্তানিতে পড়ছে নিষেধাজ্ঞা; ব্যাপক হারে হচ্ছে দরপতন।জেলার অন্যান্য উপজেলার মতো দেবহাটাতেও বেশ সক্রিয় চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করা অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। সিরিঞ্জ ও সুইয়ের মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য চিংড়িতে জেলি, সাগুদানা, ফিটকিরি’র মিশ্রণ, পানিতে ভেজানো চিড়া ও ভাতের মিশ্রণ ইনজেক্ট করে চিংড়ির ওজন ও সাইজ বৃদ্ধি করে গ্রেড অনুসারে চড়া দামে বিক্রি ও রপ্তানি করছে এবং মোটা টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। ফলে বিশ্ববাজারের পাশাপাশি দেশীয় বাজারেও প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা।সম্প্রতি পারুলিয়া চিংড়ি বণিক সমিতির নেতারা রপ্তানিযোগ্য বাগদা ও গলদা চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ হাতে নিয়েছিলো, যার ফলে পারুলিয়া মৎস্য সেডে মাছ কমতে থাকে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা বর্তমানে আশপাশের এলাকাগুলোতে রপ্তানিযোগ্য চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশের আস্তানা গেড়েছে। এতে করে পারুলিয়া চিংড়ি বণিক সমিতির পুশ বন্ধেও উদ্যোগটি ব্যাহত হয়েছে।
পারুলিয়া মৎস্য সেডের একজন ব্যাবসায়ী বলেন আশে পাশের বাজার গুলার সাথে তাল মিলে ব্যাবসা করতে গেলে আমাদের পুশ করা ছাড়া কোন উপায় নাই, আমরা যখন মাছে পুশ না করবো তখন আমাদের মাছ ক্রায় করতে হবে কম রেটে, কিন্তু আমরা যখন কম রেট দিবো তখন চাষীরা আমাদের আশে পাশের সেডে চলে যাচ্ছে মাছ নিয়ে। এতে করে আমাদের ব্যাবসায় ক্ষতি হচ্ছে উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে পুশ করতে হয়। তিনি আরো বলেন, আমারা পুশ বন্ধ করলেও উপজেলার গাজীরহাট মৎস্য শেড, শশাডাঙ্গা মৎস্য শেড এবং আশাশুনির বদরতলা মৎস্য শেড ও ব্যাংদহা এলাকায় এই পুশ কাজ চলে রমরমা সেই জন্য বাধ্য হয়ে আমাদের ও করতে হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন দেবহাটা মৎস্য সেড গুলাতে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করেছি বিভিন্ন ব্যাবসায়ী কে জেল জরিমানা দেওয়া হয়েছে।চিংড়ি আমাদের রপ্তানি আয়ের অন্যতম একটা উৎস। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারনে বিদেশে আমাদের বদনাম হচ্ছে। আর সাতক্ষীরা হচ্ছে চিংড়ি উৎপদনের জন্য অন্যতম। তাই আমাদের সুনাম ও এই সম্পদ রক্ষার্থে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।