হোম ফিচার দীপু মনির প্রশ্ন: মানবাধিকার আছে শুধু মানবতাবিরোধী অপরাধীদের!

রাজনীতি ডেস্ক:

মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে দেশব্যাপী জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে প্রশ্ন রেখে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, মানবাধিকার শুধু আছে যুদ্ধাপরাধীদের, মানবাধিকার শুধু আছে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠকদের?

বুধবার (১৬ আগস্ট) ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমাদের মানবাধিকারের সবক দেয়া হয়, একাত্তরে ৩০ লাখ মানুষ হত্যা করা হলো–তাদের কি মানবাধিকার ছিল না? বঙ্গবন্ধু এবং তার পুরো পরিবারকে পঁচাত্তরে হত্যা করা হলো–তাদের কি মানবাধিকার ছিল না!

তিনি বলেন, ‘এই মানবাধিকারবিরোধী অপরাধ যারা করেছিল, তারাই আজ মানবাধিকারের কথা বলে। এই অপকর্মের পক্ষে যারা ছিল, তারাই আজ মানবাধিকারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে আমাদের সবক দেয়।’

মানবাধিকার শুধু আছে যুদ্ধাপরাধীদের, মানবাধিকার শুধু আছে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠকদের।

দীপু মনি বলেন, সদ্য প্রয়াত একজন যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একজন লিখেছেন: কাবাশরিফ থেকে সেই সদ্যপ্রয়াত ব্যক্তি বের হয়ে আসছেন এবং সেখানে লেখা হয়েছে: আমরা কী হারালাম। ফ্যাক্টস চেকার দিয়ে ছবিটি চেক করে দেখা গিয়েছে যে ছবিটি ২০১৬ সালের। একটি দেশের রাষ্ট্রপতি কাবাঘর থেকে বেরিয়ে আসার ছবি এডিট করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে।’

যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে এসব কাজ করে তারা কতটা ঘৃণিত কাজ করে, এসব ঘৃণিত কাজের জন্য তারা কাবাশরিফকে ব্যবহার করতে তাদের বুক একটুও কাঁপে না, যোগ করেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হার হয়েছিল ৯ শতাংশ। যেখানে আজও আমরা যেতে পারিনি এবং ৭৫-পরবর্তী সময়ে যে সামরিক শাসকরা দেশের ক্ষমতায় এসেছিল, তাদের সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩.৪ শতাংশের বেশি যেতে পারেনি।

বঙ্গবন্ধু একদিকে যেমন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিলেন, অন্যদিকে দেশটি সকল ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল।

মন্ত্রী বলেন, ‘আজ যেকোনো ক্ষেত্রে আমরা কোনো না কোনো কাজ করতে চাই না কেন, কোনো উন্নয়ন করতে যাই, দেখা যায় তার গোড়াপত্তন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন: ‘আমি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।’ একজন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর অর্থ কী? একজন দুঃখী মানুষ যদি তার মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা পায়, তাহলে তার মুখে হাসি ফোটে। এর সবকিছুই বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন করতে এবং তিনি করতে সক্ষম হয়েছিলেন তার তিন বছর সাত মাসের শাসনামলে।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু তার দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য নিজ দল আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করে দিয়ে বাকশাল করেছিলেন। এই কর্মসূচি সফল হলে বিশ্ব এক নতুন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা পেত।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন