হোম অন্যান্যসারাদেশ দিরাইয়ে একই ঘরে বিএনপি-ছাত্রলীগের বসবাস

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এবং বর্তমানে তিনি বিএনপির একজন স্থানীয় নেতা হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিত রয়েছে । তিনি হলেন ইউনিয়নের হাসনাবাজ গ্রামের মো. আবুল মিয়া । কিন্ত তার ছেলে হৃদয় হোসেন ছাত্রদল করলে ও তিনি এখন ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে এলাকায় পরিচয় দিচ্ছেন এমন অভিযোগ একাধিক স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ নেতৃবৃন্দের।

অনুরুপ আরেকজন হলেন একই ইউনিয়নের লৌলাারচর গ্রামের কামেশ্বর হাজরা তিনি দিরাই শাল্লা আসনের সাবেক বিএনপির সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরীর খুবই অনুগত এবং চরনারচর ইউনিয়নের ৪নং ওযার্ড বিএনপির সহ সভাপতি হিসেবে উনি বর্তমানে বহাল থাকলে ও তিনি এখন নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে দাবী করছেন আর উনার ছেলে সুজন হাজরা ভূট্রো নিজেকে চরনারচর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে এলাকায় এখন পিছিয়ে নেই ।

স্থানীয় একাধিক আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ নেতারা জানান,এই দুই ছাত্রলীগ নেতার অভিভাবকরা সবসময়ই বিএনপির আদর্শের রাজনীতিতে বিশ্বাসী হলেও তাদের উত্তরসূরী হিসেবে সুজন হাজরা ও হৃদয় হোসেনরা কিভাবে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে গড়া ঐতিহ্যবাহি সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে নিজেকে দাবী করেন তা আমাদের বোধগম্য নয় তবে পিতাপূত্ররা সুযোগ সন্ধানী এবং মূলত সংগঠনে অনুপ্রবেশকারী।
সম্প্রতি গত ১৫ই মার্চ এলংজুরী গ্রামের মাঠে হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠান চলাকালে সুজন হাজরা,হৃদয় হোসেন,সন্দীপ দাস,অনিক দাস গংদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নামধারী ১০/১২ জন গিয়ে এক কিশোরীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।

এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত এলাকার বেশকিছু ভক্তরা তাদের চলে যেতে অনুরোধ করলে ও তারা ঐ কিশোরীটিকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। সাধারন মানুষজন শেষদিকে অতিষ্ঠ হয়ে তাদেরকে কিছুটা শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বিদায় করেন। কিন্ত গত ১৮ই মার্চ সুজন হাজরা,হৃদয় হোসেন,সন্দীপ দাস ও অনিক দাসের নেতৃত্বে ১০/১২জন বখাটেরা মিলে পেরুয়া গ্রামের ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে ত্রিমুখী রাস্তায় রাতে এলংজুরী গ্রামের নিরীহ ঝলক তালুকদারের উপর পূব-পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে বেদড়ক পিঠিয়ে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায়। ঝলকের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় শ্যামারচর বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ ব্যাপারে চরনারচর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাহীন সুলতান আবুল জানান,সুজন হাজরা ভুট্রো ও হৃদয় হোসেনরা এলাকার চিহিৃত বখাটে তারা ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে চাদাঁবাজিসহ মেয়েদের সাথে ইভটিজিংয়ের মতো ফৌজধারী অপরাধ একের পর এক করেই চলেছে।

তিনি বলেন, সুজন হাজরা ও হৃদয়ে হোসেনের পিতারা কামেশ্বর হাজরা ও আবুল হোসেন সুনামগঞ্জ-২ আসনের সাবেক বিএনপির সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরীর অনুগত এবং এখনো বিএনপির নেতা হিসেবে পরিচিত। তাহলে তাদের সন্তনরা কোনদিনই জাতির পিতার হাতের গড়া ঐহিত্যবাহি সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কমী হতে পারেন না তারা অনুপ্রবেশকারী।

সম্প্রতি গত ২৬ ডিসেম্বর চরনারচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি জগদীশ সামন্তকে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করেন। কিন্ত ঐ নির্বাচনে প্রতিপক্ষ পরিতোষ রায় যিনি নিজেকে আওয়ামীলীগার দাবী করেন এবং নেত্রীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতিক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন । আর যারা নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে দাবী করেন তারা কিভাবে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র আনারস প্রতিকের প্রার্থী পরিতোষ রায়ের পক্ষে প্রকাশ্য প্রচার প্রচারনায় অংশ নেন সেটা এলাকার মানুষের কাছে দিবালোকের মতো পরিস্কার। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরিতোষ রায়কে বিজয়ী করতে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে নৌকার প্রার্থীকে প্ররাজিত করতে সুজন হাজরা ও হৃদয় হোসেন,সন্দীপ দাস,অনিক দাস গংরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে আনারস প্রতিকে ভোট প্রার্থনা করেন। তাদের কারণেই নৌকার প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে নির্বাচনে । আমি চরনারচর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হিসেবে নেত্রীর মনোনীত নৌকার প্রার্থী জগদীস সামন্তের পক্ষে ইউপি নির্বাচনে গত ২৪ ডিসেম্বর এলংজুরী গ্রামে জনগনের নিকট ভোট প্রার্থনা ও প্রচার প্রচারনা শেষে এলংজুরী স্কুলের পাশে রাতে আসা মাত্রই বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. আবুল হোসেনের ছেলে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসী হৃদয়,সুজন হাজরা ভুট্রো,আরেক ছাত্রলগি নামধারী হুদয় হোসেন গংদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন মিলে আমি এবং সাবেক ইউপি সদস্য হাবুল মেম্বারের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে আমাদেরকে রক্তাক্ত করে। হামলাকারীরা যাওয়ার সময় আমাকে নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়া থেকে বিরত থাকতে হুমকি ও দিয়ে যায়।

তিনি বলেন,সুজন হাজরা,হৃদয় হোসেন গংরা ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে এলাকায় দাম্ভিকতা দেখিয়ে চাঁদাবাজি ইভটিজিংসহ একের পর এক নানান অপকর্ম করেই চলেছে। তিনি ঐ সমন্ত মুখোশদারী ও অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।

তিনি বলেন ঐ সমস্ত গুটি কয়েক সুযোগ সন্ধানী ও অনুপ্রবেশকারীর কারণে ছাত্রলীগ তথা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড গুলোকে করে দেয়া যায় না । ওরা মূলত বিএনপির আদর্শের অনুসারী হিসেবে সুজন হাজরা ও হৃদয় হোসেন গংদের নেতৃত্বে এলংজুরী গ্রামের নিরীহ ঝলক তালুকদারের উপর হামলার ঘটনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,সন্ত্রাসী হৃদয় হোসেন ও সুজন হাজরা গংরা গত ১৫ মার্চ রাতে এলংজুরী মাঠে হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠানে গিয়ে এক কিশোরীর সাথে ইভটিজিং এর কারণে সাধারন মানুষজন তাদেরকে গণধোলাই দেয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন