হোম অন্যান্যকৃষিবার্তা ত্রাণ দেয়া হচ্ছে সবজি, নায্য মূল্য পেয়ে খুশি কৃষক

ত্রাণ দেয়া হচ্ছে সবজি, নায্য মূল্য পেয়ে খুশি কৃষক

কর্তৃক
০ মন্তব্য 181 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক :

রাণীনগরে কর্মহীনদের ত্রাণ দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন রকমের সবজি। এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল আলম। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার কর্মহীন হয়ে পড়া দিনমজুর, হতদরিদ্র, অসহায় মানুষদের মাঝে তিনি নিজস্ব অর্থায়নে মানবিক খাদ্য সহায়তা কেন্দ্র চালু করে প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রী সরবরাহ করে আসছেন। তিনি জনসমাগম না করে কর্মহীনদের বাড়িতে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে খাবার সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন।

ফেইসবুক, হটলাইন, মোবাইল ফোনে কর্মহীনদের সন্ধান পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে খাবার সামগ্রী। আর এই খাবার সামগ্রীতে বর্তমানে চালের সঙ্গে দেয়া হচ্ছে বেগুন, করলা, পটল, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের কারণে সবকিছু বন্ধ হওয়াই স্থানীয় কৃষকদের বিভিন্ন রকমের সবজি বাজারজাত করতে না পারায় নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করতে সাংসদ এই ব্যতিক্রমী পদ্ধতিটি গ্রহণ করেছেন।

তিনি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে এই সবজিগুলো কিনে কর্মহীনদের মাঝে খাবার সামগ্রীর সঙ্গে বিতরণ করছেন। এতে বাজার বন্ধ থাকার পরেও সবজি বিক্রি করে ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় খুশি রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার কৃষকরা।

করোনার আতঙ্কে হাট-বাজার, দোকান, যানবাহন বন্ধ থাকায় গত সপ্তাহ জুড়ে জাত ভেদে বেগুনের দাম ছিল ৭টাকা কেজি। কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ভূমিকার কারণে সেই বেগুন আজ ১৫টাকা কেজিতে জমিতেই বিক্রয় হচ্ছে। যে এলাকায় সবজি ক্ষেত আছে সেই এলাকায় কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি সাংসদ নিজে ও তার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে উৎপাদিত সবজি ক্রয় করায় চাষীরা এখন নায্যমূল্য পাচ্ছেন।

আর এসব সবজি কর্মহীনদের জন্য খাবার সামগ্রীর সঙ্গে মানবিক খাদ্য সহায়তা কেন্দ্র থেকে বিতরণ করা হচ্ছে। গত ২৯মার্চ থেকে চালু হওয়া এই কেন্দ্র থেকে তার নির্বাচনী এলাকা আত্রাই ও রাণীনগরের অসহায় হতদরিদ্র মানুষের মাঝে চাল, ডাল, আলু, তেল, লবণ ও সাবানসহ ৫০লক্ষাধিক টাকার খাদ্যসামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌঁছানো হয়েছে এবং এখনোও তা চলমান রয়েছে। যতদিন এই করোনা সংকট বর্তমান থাকবে ততদিন এই কার্যক্রম চলবে বলে জানান সাংসদ।

উপজেলার চকমনু গ্রামের কৃষক ময়নুল ইসলাম ও এবাদুল হক জানান, করোনার কারণে ক্ষেতের সবজি কেউ নিচ্ছে না। ক্ষেতের বেগুন, করলা, পটল, কাঁচামরিচ ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। এমতাবস্থায় গত কয়েক দিন ধরে সাংসদ সাহেব আমাদের জমি থেকে করলা, বেগুন, পটল, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজি কিনছেন। তাই আমরা নায্যমূল্য পেয়ে অনেক খুশি এবং লোকসান থেকে রক্ষা পাচ্ছি। এছাড়াও খুচরা বাজারেও দাম একটু বেড়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে সব ধরনের সবজির ফলন ভালো হলেও করোনা ভাইরাসের কারণে সেগুলো সঠিক ভাবে বাজারজাত করতে না পারায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলো। তাই আমি নিজে সাংসদ মহোদয়কে ত্রাণের সঙ্গে সবজি দিতে উদ্বুদ্ধ করি। এতে করে এই খাবার সামগ্রী পাওয়া ঘরে থাকা মানুষদের আলাদা করে আর বাজারে সবজি কিনতে যেতে হবে না অপরদিকে কৃষকরাও আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন।

সাংসদ মো: ইসরাফিল আলম বলেন, আমি বর্তমানে কৃষকদের বাঁচানোর স্বার্থে ত্রাণ সামগ্রীতে থাকা খাবার পণ্যের তালিকায় কিছু সবজি যোগ করেছি। কারণ আমার নির্বাচনী এলাকায় চলতি মৌসুমে সবজির ব্যাপক ফলন হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে কৃষকরা সবজির নায্যমূল্য পাচ্ছেন না। তাই চাষীদের বিষয়টি মাথায় রেখে মানবিক খাদ্য সহায়তার তালিকায় কয়েকটি সবজি যুক্ত করেছি। এতে কৃষকরা একটু হলেও তাদের সবজির নায্যমূল্যটা পাবেন। কারণ কৃষক বাঁচলেই আমরা বাঁচবো।

সবার আগে প্রাধান্য দিতে হবে এই সব কৃষক ভাইদের। আমি যতদিন এই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করবো ততদিন যত সবজি পাওয়া যাবে সেগুলো আমি কিনে নিয়ে ত্রাণ সামগ্রীতে দিবো। সারা দেশেই যদি আমরা যারা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছি তারা যদি তালিকায় এলাকা ভেদে উৎপাদিত সবজিগুলো কৃষকদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ত্রাণ সামগ্রীতে যোগ করি তাহলে কোন কৃষকরা লোকসানে পড়বে না বলে আমি আশাবাদী।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন