হোম জাতীয় তৃতীয় দিনের কর্মবিরতিতে ঢামেক ইন্টার্ন চিকিৎসরা

জাতীয় ডেস্ক :

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক এ কে এম সাজ্জাদ হোসেনকে মারধরের ঘটনায় শনিবার (১৩ আগস্ট) তৃতীয় দিনের মতো চলছে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। এতে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় সরাসরি কোনো প্রভাব না পড়লেও দায়িত্বরত চিকিৎসকের ওপর বাড়তি চাপ পড়েছে।

শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের (ইচিপ) সভাপতি ডা. মহিউদ্দিন জিলানী বলেন, ‘দুপুরে পরিচালকের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে পরিচালক বলেছেন, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে তার। খুব শিগগিরই অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

ডা. জিলানী বলেন, ‘যারা আমাদের সহকর্মী ডা. সাজ্জাদের ওপর হামলা করেছে, তাদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত আমাদের এই কর্মবিরতি চলবে। আমরা শিগগিরই পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করব।’

ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘বৈঠকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। এটি সমাধানের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছি। থানা পুলিশ জানিয়েছে, কয়েকজনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। শিগগিরই মূল আসামিকে ধরতে পারবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’

এই কর্মবিরতিতে হাসপাতালের রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে কি না–এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত রোগীদের সেবায় কোনো প্রভাব পড়েনি। আমাদের হাসপাতালে এক হাজার অনারেবল মেডিকেল অফিসার (এইচএমও) আছেন। এ ছাড়া ইনডোর মেডিকেল অফিসার (আইএমও)-সহ রেসিডেন্সিয়াল সার্জন রয়েছেন। তারা সার্বক্ষণিক চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে থাকায় এসব চিকিৎসকের ওপর বাড়তি কিছুটা চাপ পড়েছে।’

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে আসা ইলিয়াস হোসেন নামে এক রোগীর স্বজন জানান, সকালে গ্রামেই অটোরিকশা উল্টে আহত হয়েছেন ইলিয়াস। স্থানীয় হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। এখানে এসে টিকিট কেটে তাকে জরুরি বিভাগেই চিকিৎসা করানো হয়।

চিকিৎসা নিতে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়েছে কি না–জানতে চাইলে এই রোগীর স্বজনরা জানান, বাড়তি কোনো ঝামেলা হয়নি। তবে রোগীর চাপ বেশি থাকায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের।

উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢাকা মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসক এ কে এম সাজ্জাদ হোসেন মারধরের শিকার হন। তিনি অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দেয়া ও ঢাবির টি-শার্ট পড়া কয়েকজন যুবক তার পরিচয় জানতে চায়। পরিচয় দেয়ার পরও তারা তাকে ব্যাপক মারধর করে।

এর পরদিন ৯ আগস্ট ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আরটিমেটাম দেয়। ৪৮ ঘণ্টায় কোনো সুরাহা না হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপর ১২টা থেকে শুরু হয় তাদের এই কর্মবিরতি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন