অনলাইন ডেস্ক:
খুলনায় ক্রমশ বাড়ছে অপরাধমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড। গ্রুপে-গ্রুপে দ্বন্দ্ব, মাদক-চাঁদাবাজি ও অস্ত্র বিক্রিসহ নানা কারণে ঘটছে হত্যাকাণ্ড। এসব ঘটনায় প্রকাশ্যে ও আড়ালে ব্যবহার হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।
মাদক ব্যবসা, ভূমি দস্যুতা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র বিক্রি ও ভাড়াটে খুনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে খুলনা শহরের ত্রাস হিসেবে চিহ্নিত তিনটি অপরাধী গ্রুপ।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, তাদের মধ্যে গ্রেনেড বাবুর গ্রুপে অস্ত্রধারী সদস্য রয়েছে ৬ জন। মামলা রয়েছে তিন ডজনের বেশি। গ্রেনেড বাবুর সঙ্গে মাদক বিক্রির এলাকা দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে নূর আজিম গ্রুপের। এই গ্রুপে অস্ত্রধারীর সংখ্যা ১৪ জন। মামলা রয়েছে ৭০টি। তালিকায় রয়েছে আশিক গ্রুপ। এই দলের সদস্য ২৩ জন। তাদের বিরুদ্ধে মোট মামলা রয়েছে ১১০টি।
নগরীতে এ তিন দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বসহ জেলাজুড়ে ছোট ছোট দল-উপদল বা ব্যক্তি পর্যায়ে প্রভাব বিস্তার, জমি-ঘের নিয়ে বিরোধ, ইজিবাইক ছিনতাই, কিশোর গ্যাং, মাদক কারবারি, পারিবারিক দ্বন্দ্বসহ বিভিন্ন কারণে ঘটছে হত্যাকাণ্ড। এক বছরে অন্তত অর্ধশত হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হয়েছে খুলনা। হত্যাসহ অপরাধমূলক এসব ঘটনায় ব্যবহার হচ্ছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র।
সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর তথ্য মতে, জেলায় গত এক বছরে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৭০টি আগ্নেয়াস্ত্র, আটক হয়েছে ৪০ জনের বেশি। তবে নগরীতে অপরাধ জগতের নেতৃত্বে থাকা সন্ত্রাসীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রধান তালুকদার রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘খুলনায় দিন দিন অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। এসব অস্ত্রে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধে রাষ্ট্রকেই উদ্যোগী হতে হবে।’
এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারিসহ নগরীতে থাকা দল মত নির্বিশেষে কোনো অপরাধী ছাড় পাবে না।’