হোম আন্তর্জাতিক তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন

তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 15 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
তাইওয়ান ঘিরে যৌথ স্থল, নৌ ও রকেট বাহিনীর মহড়া শুরু করেছে চীন। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) থেকেই এই মহড়া শুরু হয়। এই মহড়াকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে একটি ‘কঠোর সতর্কবার্তা’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তেকে ‘পরজীবী’ বলে আক্রমণ করেছে বেইজিং। তাইওয়ানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে চীনা নৌবাহিনীর উপস্থিতির জবাবে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত দ্বীপটিকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে চীন, এবং এটি দখলে নিতে বলপ্রয়োগের সম্ভাবনাও কখনোই খারিজ করেনি।

গত মাসে লাই চিং-তে চীনকে ‘বিদেশি শত্রু শক্তি’ বলে আখ্যা দেওয়ার পর এই মহড়া শুরু হলো।

পূর্ব থিয়েটার কমান্ডের ঘোষণার সঙ্গে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের একটি কার্টুন পোকা হিসেবে দেখানো হয়েছে। ভিডিওতে ও প্রেসিডেন্ট পোকাকে চপস্টিক দিয়ে ধরে রাখা হয়েছে এবং তার নিচে জ্বলছে একটি দগ্ধ তাইওয়ান। ভিডিওতে ইংরেজিতে তাকে ‘পরজীবী’ বলা হয়েছে।

পূর্ব থিয়েটার কমান্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই মহড়ার মূল লক্ষ্য হলো সমুদ্র ও আকাশে যুদ্ধ প্রস্তুতির টহল, সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, সামুদ্রিক ও স্থল লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানা এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও পথনির্দেশের ওপর অবরোধ আরোপ করা।

তাইওয়ানের সরকার এই মহড়ার নিন্দা জানিয়েছে। প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, চীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ‘একজন ঝামেলাসৃষ্টিকারী’ হিসেবে পরিচিত এবং তাইওয়ানের সরকার আত্মরক্ষা করার জন্য যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ও সক্ষম।

তাইওয়ানের সরকার বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, দ্বীপের ভবিষ্যৎ কেবল তাইওয়ানের জনগণই নির্ধারণ করতে পারে।

দুইজন শীর্ষস্থানীয় তাইওয়ান কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ১০টিরও বেশি চীনা সামরিক জাহাজ তাইওয়ানের ২৪ নটিক্যাল মাইল সংলগ্ন অঞ্চলের কাছে চলে এসেছে এবং এর জবাবে তাইওয়ান তার নিজস্ব যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে।

তবে চীনা সামরিক বাহিনী কোনও সরাসরি গোলাবর্ষণ করেছে এমন কোনও তথ্য তাইওয়ান এখনও শনাক্ত করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চীনের শানডং বিমানবাহী রণতরী গ্রুপ সোমবার দ্বীপের প্রতিক্রিয়া অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। তাইওয়ানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে সামরিক বিমান ও জাহাজ মোতায়েন করেছে এবং স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে।

এই মহড়া এমন সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ জাপান ও ফিলিপাইনে সফর শেষ করেছেন। সেখানে তিনি চীনের সমালোচনা করেন এবং বলেন, চীনের আগ্রাসন মোকাবিলায় জাপান ‘অপরিহার্য’।

একজন শীর্ষস্থানীয় তাইওয়ান নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ অনুযায়ী, চীন ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনও ‘পরিলক্ষিত সংঘর্ষ’ এড়াতে চায়। কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন বাণিজ্য আলোচনার আগে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চায় না। তাই তাইওয়ানকে তারা অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে।

ওই কর্মকর্তা বলেছেন, তাইওয়ান তাদের জন্য সেরা অজুহাত। এ কারণেই তারা মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব এশিয়া ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গেই এই সামরিক মহড়া শুরু করল।

যুক্তরাষ্ট্রের তাইওয়ান দূতাবাস, আমেরিকান ইনস্টিটিউট ইন তাইওয়ান, জানিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র দ্বীপটির পাশে থাকবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন