হোম জাতীয় ঢাকায় ‘বুলেট’ গতিতে ছড়াচ্ছে করোনা

জাতীয় ডেস্ক :

দেশব্যাপী করোনা মহামারি আবারও ভীতিকর রূপ নিচ্ছে। তবে দেশের জেলা শহরগুলোর তুলনায় মহানগরগুলোর করোনা সংক্রমণের বেশির ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে উদ্বেগজনক হারে। যা দেখে মনে হচ্ছে, ঢাকায় দ্রুতই ভয়ংকর রূপ নেবে করোনা।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত বুলেটিন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া যায়।

করোনা সংক্রমণের দৈনন্দিন তালিকায় দেখা যায়, গত ১ জানুয়ারি সারা দেশে ৩৭০ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। যার মধ্যে ঢাকা মহানগরে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন ৩২৭ জন। মাত্র ৫ দিনের ব্যবধানে ৬ জানুয়ারি এই সংখ্যা গিয়েছে পৌঁছেছে সারা দেশে ১,১৪০ জন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭৮ জন। কিন্তু শুধু ঢাকা মহানগরেই আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৯৫০ জন। ঢাকা মহানগর ব্যতীত দেশব্যাপী আক্রান্ত শনাক্ত মাত্র ১৯০ জন! যার অর্থ দাঁড়াচ্ছে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ঢাকায় করোনা সংক্রমণের হার পাঁচগুণ বেশি!

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো তথ্যে দেখা যায়, গত ২ জানুয়ারি দেশে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন ৫৫৭ জন যার মধ্যে ঢাকায় ৪৮৫ জন। এরমধ্যে শুধু মহানগরেই আবার আক্রান্ত শনাক্ত ৪৭৭ জন। ৩ জানুয়ারির বুলেটিনে জানা যায়, সেদিন সারাদেশে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন ৬৭৪ জন, যারমধ্যে ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন ৫৮০ জন। এরমধ্যে শুধু মহানগরে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেড়ে ৫৬৮ জনে পৌঁছায়।

ঠিক এর একদিন পর ৪ জানুয়ারি সারাদেশে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন ৭৭৫ জন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন ৬৫৫ জন। কিন্তু শুধু ঢাকা মহানগরে আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে ৬৩৭ জনে পৌঁছায়।

এর পর গত বুধবার (৫ জানুয়ারি) দেশব্যাপী আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন ৮৯২ জন। ঢাকা মহানগরেই আক্রান্ত হয়েছেন ৭২৩ জন। কিন্তু একদিন পরই এই সংখ্যা একলাফে হাজার ছাড়িয়ে যায়। সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ৫ জানুয়ারি করোনায় ৩ জনের মৃত্যু হলেও ৬ জানুয়ারি তা বেড়ে ৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

সব মিলিয়ে গত ৬ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঢাকায় করোনা সংক্রমণের হার প্রতিদিনই আগের দিনের তুলনায় বাড়ছে এবং এই বৃদ্ধির হার সমগ্র দেশের তুলনায় প্রায় পাঁচগুণ!

অবশ্য করোনায় আক্রান্ত হবার হার বৃদ্ধির বিষয়টি আগেই জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন। গত ৩০ ডিসেম্বর তিনি বলেছিলেন, আমরা টিকা দিচ্ছি, পাশাপাশি বুস্টার ডোজ দিচ্ছি। তারপরও দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, আমাদের সর্তক থাকতে হবে। বিভিন্ন দেশ লকডাউন দিচ্ছে।

এরইমধ্যে গত মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) করোনা মোকাবিলায় নতুন করে ১৫ দফা নির্দেশনা জারি করেছ স্বাস্থ্য অধিদফতর।

এদিকে, বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৭০ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের ৫ জন পুরুষ ও দুইজন নারী।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন