অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকার রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও গাড়ি পার্কিং বন্ধে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় রাজউক চেয়ারম্যান ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রুল জারি করেন।
আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে কেন এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
আবেদনের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, ঢাকার রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও গাড়ি পার্কিং বন্ধে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)-এর পক্ষে ২০১৫ সালে একটি রিট করা হয়।
সে রিটের প্রাথমিক শুনানির পর আদালত রুল দেন। রুলে অনুমোদনহীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। সেইসঙ্গে কোন কোন ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় নকশাবহির্ভূত স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে, রাজউক চেয়ারম্যানকে ৬০ দিনের সে তালিকা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে রাজউক গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার কয়েকশ ভবনের তালিকা আদালতে দাখিল করে।
এরপর বিভিন্ন সময় রাজউক প্রতিবেদন দিয়ে আদালতকে জানায়, ২০১৬ সাল থেকে তারা এসব অবৈধ স্থাপনা অপসারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। একপর্যায়ে রুলের চূড়ান্ত শুনানি করে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই রায় দেন হাইকোর্ট।
সে রায়ে রাজধানীতে সড়কের পাশে যেসব ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় নকশা বহির্ভূতভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকান তৈরি করা হয়েছে সেগুলো এক মাসের মধ্যে ভেঙে ফেলতে ভবন মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়। আর ভবন মালিকরা তা না করলে পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে তা করতে রাজউককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এক্ষেত্রে ভাঙার খরচ ভবন মালিকের কাছ থেকে আদায় করতে বলা হয়। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা থেকে অননুমোদিত পার্কিং সরাতে আইনগত পদক্ষেপ নিতে সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু এই রায় বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় এবং রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে প্রতিবেদন না দেওয়ায় গত বছর দুই মেয়র ও রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে অনুরোধ করা হয়। সে নোটিশের পরও পদক্ষেপ না নেওয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে আবেদন করা হলে আজ সে আবেদনের শুনানির নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।