স্বাস্থ্য ডেস্ক :
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন ক্রমেই ডেল্টার জায়গা দখল করছে বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রোববার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আয়োজিত ভার্চুয়াল বুলেটিনে সংস্থাটির মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওমিক্রন আক্রান্তদের জটিলতা অপেক্ষাকৃত কম বলা হলেও ঝুঁকিতে বয়স্কসহ দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগে আক্রান্ত মানুষজন। সময়ের সঙ্গে হাসপাতালে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এমন রোগী ভর্তির সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওমিক্রন বাড়ার পাশাপাশি ডেল্টা রয়ে যাওয়ায় ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের জন্য প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল বুলেটিনে সংস্থাটির মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, কমিউনিটি পর্যায়ে ওমিক্রনের সংক্রমণ ঘটছে। আমরা দেখছি, ওমিক্রমন একটু একটু করে ডেল্টার জায়গাগুলোকে দখল করে ফেলছে। ওমিক্রনের যে উপসর্গগুলো আছে, শতকরা ৭৩ শতাংশ মানুষের নাক দিয়ে পানি ঝরছে। ৬৮ শতাংশ মানুষের মাথা ব্যথা করছে। ৬৪ শতাংশ রোগী অবসন্ন-ক্লান্তি অনুভব করছেন। ৭ শতাংশ রোগী হাঁচি দিচ্ছেন। গলা ব্যথা হচ্ছে ৭ শতাংশ রোগীর। ৪০ শতাংশ রোগীর কাশি হচ্ছে। এই বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। এখন সিজনাল যে ফ্লু হচ্ছে তার সঙ্গে কিন্তু মিল রয়েছে।
স্বাস্থ্যের এ কর্মকর্তা বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগীর সংখ্যা যদি প্রতিদিনই বাড়তে থাকে এবং স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে আমরা যদি নিজের মতো করে চলতে থাকি তাহলে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে, সেটি সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর বাড়তি চাপ প্রয়োগ করবে। এই অতিমারিকে যদি আমরা পরাস্ত করতে চাই তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের শেষ থেকে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। ২২ জানুয়ারি এসে শনাক্তের হার ২৮ শতাংশের বেশি রয়েছে। সপ্তাহের শুরু ১৬ জানুয়ারি যেটা ছিল ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। গতবছরের শেষ থেকে এ বছরের শুরু পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য আগ্রহী রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০০টি নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে শনাক্তের হার ২৮ শতাংশে বেশি। আজ পর্যন্ত যে গড় আছে তা ১৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
এদিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রিদওয়ান উর রহমান বলেন, এটা ঠিক ডেল্টাতে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয় এবং মারা যায় ওমিক্রনে কম। কম মানে হয় না, এটাও নয়। তাহলে ডেল্টা যদি এক হাজার হয় সেখানে ১০ জন মারা যাবে, কিন্তু ওমিক্রন তো এক সঙ্গে ১০ লাখ হয়ে যাবে, তখন কিন্তু মৃত্যুর নম্বরটা কাছাকাছি চলে আসতে পারে।