জাতীয় ডেস্ক:
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নিয়োগ বাতিল করে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) তার নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইং (আইন ও বিচার বিভাগ)।
সম্প্রতি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিচারিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে মন্তব্য করে এবং তার বিপক্ষে বিবৃতিতে সই না করার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়ে আলোচনায় আসেন এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সলিসিটর রুনা নাহিদ আক্তার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘দ্য বাংলাদেশ ল অফিসার্স অর্ডার, ১৯৭২এর ৪ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নিয়োগ আদেশ জনস্বার্থে বাতিলক্রমে তাঁকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
এর আগে, এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সরকারের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিচারিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ড. ইউনূসের পক্ষে ১৭৫ জন বিদেশি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটনও রয়েছেন। ওই বিবৃতির বিরুদ্ধে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাকে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে। কিন্তু, আমি ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’
অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে—এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া এমন কথা বললেও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে, সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবীরা ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতি দিচ্ছেন। সেই বিবৃতিতে তারা স্বাক্ষর দিচ্ছেন। তার একটি কপি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছে।
ড. ইউনূস প্রসঙ্গে এমরানের বক্তব্য গণমাধ্যমে আসার পরই তার বরখাস্ত হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। পরদিন মঙ্গলবারই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘তার (এমরান আহম্মদ) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে তাকে হয় পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত, অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে কথা বলা উচিত। তিনি সেটি করেননি। তিনি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।’