স্বাস্থ্য ডেস্ক:
ভয়ংকর হয়ে উঠছে ডেঙ্গুর এনসেফালাইটিস ধরন। এডিস মশার এক কামড়েই বিকল হচ্ছে মস্তিষ্ক, ঘটাচ্ছে মৃত্যু। এমনকি বেঁচে ফিরলেও পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে পড়ছেন রোগী। নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকায় মুক্তির পথ হিসেবে মশা নিধনেই জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
দু-এক দিনের সামান্য জ্বরের সঙ্গে বমি এবং শরীর ব্যথা। তবে কিছু বুঝে না উঠতেই জ্ঞান হারান রোগী। হাসপাতালে স্বজনদের ছোটাছুটি, আইসিইউতে যমের সঙ্গে কয়েক দিনের লড়াই। একপর্যায়ে সব প্রচেষ্টাকে তুচ্ছ করে দুই সন্তান আর সাজানো সংসারের মায়া ত্যাগ করেন চিকিৎসক দেওয়ান আলমিনা।
মাত্র ৩২ বছর বয়সে ডেঙ্গু এনসেফালাইটিসের বলি হতে হয় তাকে। কিন্তু কি এই ডেঙ্গু এনসেফালাইটিস?
সংক্রমণের মারাত্মক একটি ধরন ডেঙ্গু এনসেফালাইটিস বা মস্তিষ্কের প্রদাহ। মারাত্মক এই ধরনে আক্রান্তের দু-তিন দিনের মাথায়ই দেখা দিতে পারে লক্ষণ। রোগীর ডেঙ্গুর স্বাভাবিক উপসর্গগুলোর পাশাপাশি প্রচণ্ড মাথাব্যথা, অসংলগ্ন আচরণ, জ্ঞান হারানো কিংবা খিঁচুনির মতো উপসর্গ থাকতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলছেন, মানুষের মস্তিষ্কের যেকোনো অংশই ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তবে, আক্রান্তের হার খুব বেশি নয়। এতে কখনও মস্তিষ্ক, কখনও লিভার কখনও কিডনি অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুব কম বলেও জানান চিকিৎসকরা।
ডেঙ্গু এনসেফালাইটিস তুলনামূলক বিরল হলেও সংক্রমণে মৃত্যু, এমনকি শরীরে সৃষ্টি করতে পারে গুরুতর জটিলতা। ঘটতে পারে পঙ্গুত্বও। তবে হতাশার বিষয়টি হচ্ছে, কিছু সহায়ক চিকিৎসা ছাড়া নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই ডেঙ্গুর বিশেষ এই জটিলতায়।
ডেঙ্গু সংক্রমণের পর রোগীর আচরণে অসংলগ্নতা কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। মুক্তির পথ হিসেবে জোর দিচ্ছেন মশক নিধনে।