হোম ফিচার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পৈত্রিক পেশা ধরে আছে ৮১ বছরের মজিদ

শিপলু জামান, ঝিনাইদহ :

গরু গাড়ি তৈরির কারিগর আঃ মজিদ নামের এক যুবক শহরের পোষ্ট অফিস মোড়ে সড়কের পাশে পড়ে থাকা জায়গায় একটি কাঠের চাকা ও গরু গাড়ি তৈরী কারখানা গড়ে তোলেন। আঃ মজিদের দেখাদেখি একই এলাকা হতে অনেকেই এসে একই পেশায় কাজ শুরু করেন। উপজেলা জুড়ে প্রায় ৫০টিরও অধিক জায়গায় এই কারখানা ছিলো। তিনি ১৯৪০ সালে রাজশাহীর চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে এলাকায় এসে গরু গাড়ির চাকা তৈরি শুরু করেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের সেই পেশার এখন আর ভাগ্যের চাকা ঘুরে না তাদের। বাধ্য হয়ে অনেকে পাল্টিয়ে ফেলেছেন তাদের বাপ-দাদার পেশা। কাঠের এ চাকা ঝিনাইদহ.কালীগঞ্জ,কোটচাদপুর ও মহেশপুর এলাকায় বিক্রি করে থাকে।

কালক্রমে দেশের সড়ক গুলোতে নামতে থাকে স্থানীয় ভাবে তৈরি নসিমন, করিমন, ভটভটি, লাটাহাম্পার ও স্টিয়ারিং নামের ইঞ্জিনচালিত নানা বাহন। এসব শক্তিশালী যানবাহনের দাপটে রয়েছে সড়কে আর দেখা মেলে না গরু,মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ি। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া চাকা তৈরীর কারিগর আবদুল মজিদ এখন বৃদ্ধ এই পেশায় জীবনের স্বচ্ছলতা না আসলেও অকৃতিম ভালোবাসায় ছাড়তে পারেননি এই পেশা। দুই-একটা কাজ থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই ছেলে-মেয়ে নিয়ে থেকে গেছেন।

আঃ মজিদ বলেন, এটা আমার বাপ-দাদার পেশা। একসময় গাড়ির চাকা তৈরির প্রচুর চাপ ছিল। তবে এখন আর কোন চাহিদা নেই বললেই চলে। তবুও এই পেশাকে ভালবেসে পড়ে আছি। এই পেশা ছেড়ে যেতে মন চাই না। দু-একটি চাকা তৈরির অর্ডার পাই। এতেই কোন রকম টিকে আছি। আর এভাবেই নিজ পেশাকে ভালোবেসে আঁকড়ে ধরে জীবনের শেষ দিন পার হবে আঃ মজিদের।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। তাই পূর্বে সকল কাজে এ গাড়ির কোন বিকল্প ছিলনা। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ার যন্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে ফলে গরু মহিষের গাড়ি গুলো এখন আর ব্যবহৃত হচ্ছে না। তবে এটা আমাদের ঐহিত্য। এটাকে টিকিয়ে রাখা দরকার।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন