হোম অন্যান্যসারাদেশ ঝিকরগাছায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাত ভাঙ্গলো এক নারীর : থানা ও ফাঁড়িতে দু’পক্ষের অভিযোগ

ঝিকরগাছায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাত ভাঙ্গলো এক নারীর : থানা ও ফাঁড়িতে দু’পক্ষের অভিযোগ

কর্তৃক
০ মন্তব্য 111 ভিউজ
মোঃ তাজমুল হোসেন,ঝিকরগাছা,যশোরঃ
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা বাঁকড়া ইউনিয়নের বড় খরসী গ্রামের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাত ভাঙ্গলো নাহিদা বেগম নামের এক নারী। নাহিদা বেগমের স্বামী তৌহিদুর রহমান বাদী হয়ে বড় খলসী গ্রামের রমজান মালীর ছেলে জালাল মালী (৪৫), জালাল মালীর ছেলে খালেক মালী (১৯) ও জালাল মালীর স্ত্রী নাসিমা খাতুন (৩২) কে বিবাদি করে দোকানে থেকে কাপড় কেনাকে কেন্দ্র করে শত্রুতার জের ধরে বাদীর পিতা-মাতা ও স্ত্রীকে আঘাত করায় তাদের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগ এবং অপার দিকে মেয়েকে উতাক্ত করে বলে অভিযোগ এনে তৌহিদুল রহমানকে বিবাদী করে জালাল উদ্দিন বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
থানার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বড় খরসী গ্রামে তৌহিদুল রহমান নামের এক দর্জি। সম্প্রতি রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল অনুমান ৮টার দিকে একই গ্রামের জালাল মালীর মেয়ে শরিফা বেগম (২৫) কাপড় কেনা জন্য আসে। আর এই আসাকে কেন্দ্র করে বিবাদীদের সাথে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। এই শত্রুতার জের ধরে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল অনুমান সাড়ে ৮টার দিকে বাদী তৌহিদুল তার পিতা মহাতাব গাজীকে দোকানে রেখে তার মেয়েকে স্কুলে দেওয়ার জন্য বের হয়।
তার কিছুক্ষণ পর উক্ত বিবাদীরা হাতে লাঠিসোটা ও দা নিয়ে এসে বাদীকে দোকানে না পেয়ে তার পিতাকে ধাক্কা দিয়ে দোকান ঘর থেকে বের করে দেয়। বাদীর পিতা ভয় পেয়ে বাদীকে জানাতে যায়। বাদী সংবাদ পেয়ে দোকানে এসে দেখে তার দোকান ঘর ভাঙচুর করা। যাহাতে ৫০০০ টাকা ক্ষতিসাধন হয়েছে এবং দোকান ঘরের ক্যাশ বাক্সে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা নাই। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর বাদীর বাড়ীতে গিয়ে আবারো হামলা চালায়। এ হামলায় বাদীর স্ত্রী নাহিদা বেগম ও মাতা ফুলজান বেগমকে দেখে বিবাদীরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ এলোপাতাড়ি মারপিট করে। মারপিটের এক পর্যায়ে জালাল মালির হাতে থাকা দা দিয়ে বাদীর স্ত্রীকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করলে বাদীর স্ত্রী বাম হাত দিয়ে আঘাত ঠেকালে তার হাতে হাড়ভাঙ্গা জখম হয় এবং খালেক মালির হাতে থাকা লাঠি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট করে নীলাফোলা জখম করে। নাসিমা খাতুন বাদীর স্ত্রীকে চুল ধরে আছাড় দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়।
নাসিমা খাতুন বাদির মাকে জাপ্টে ধরে এবং জালাল মালি ও খালেক মালি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে ধরে রেখে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট করে নীলাফোলা জখম হয়েছে। জালাল মালি বাদীর স্ত্রীর কানে থাকা ১২ আনা ওজনের একজোড়া স্বর্ণের দুল, গলায় থাকা ২ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও খালেক মালি বাদীর মায়ের ঘরের তশোকের নিচে থাকা বাদীর মেয়ের ৪ আনা ওজনের স্বর্ণের আংটি এবং মায়ের ১.৫ ভরি ওজনের স্বর্ণ নিয়ে যায়। এছাড়াও বাদীর স্ত্রী পরনের কাপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছে।
অপার দিকে বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জালাল উদ্দিনের মেয়ে শরিফাকে মহাতাব গাজীর ছেলে তৌহিদুর রহমান উতাক্ত করে বলে অভিযোগ করেছে এবং এই বিষয়ে জালাল উদ্দিন প্রতিবাদ করতে গেলে তৌহিদুর রহমান তাকে মারপিট করেছে।
এঘটনাকে কেন্দ্র করে সংবাদকর্মীরা এলাকায় গিয়ে জালাল মালিকে খোঁজ নিয়ে তার বাড়িতে গেলে তাকে বাড়ি পাওয়া যায়নি। এমনকি জালাল মালির ভাই এলাকার প্রভাবশালী নেতা মনি সংবাদকর্মীদের সাথে সমুদয় ব্যবহার না করে অসৎ আচারণ করে।
এঘটনায় বিষয়ে উক্ত গ্রামের আদম আলীর স্ত্রী সালমা ও বুলবুল আহমেদের স্ত্রী সালমা সংবাদকর্মীদের জানান, তৌহিদ হয়তো যে কোন একটা অন্যায় করতে পারে। এই বিষয়ে জালাল মালির উচিৎ ছিলো তৌহিদের অভিভাবক পিতা-মাতা ও মেম্বারকে জনানো উচিৎ ছিলো। কিন্তু সে এমন কোন কিছু না করে হঠাৎ করে বাড়িতে এসে তৌহিদের পিতা-মাতা ও স্ত্রীকে মেরেছে। তারা যেন গ্রামের মধ্যে ক্ষমতা দেখিয়ে আবাও এমন কর্মকান্ড করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।
স্থানীয় মেম্বার শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, তারা দু’পক্ষই আমার ভাই। আমি চাইছিলাম ঘটনার বিষয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসবো। কিন্তু তারা দু’পক্ষই থানা ও ফাঁড়ি করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি বসলেই মিটে যেতো কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আমি এখনো বসতে পারিনি!
ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগের তদন্ত অফিসার এসআই আনিছুর রহমান আনিছ জানান, তৌহিদুল রহমান নামের একব্যক্তি ০৩জনকে বিবাদী করে একটি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সঠিক তথ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের অভিযোগের তদন্ত অফিসার এএসআই সুমন জানান, জালাল উদ্দিন নামের একব্যক্তি তৌহিদুর রহমান নামের একজনকে আসামী করে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের উপর তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন