কঞ্জন কান্তি চক্রবর্তী, ঝালকাঠি :
ঝালকাঠির রাজাপুরে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগে তার প্রেমিক রবিউল হাওলাদার সহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে কিশোরীর নানী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তিনজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে পুলিশ ওই কিরোশীর স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পযর্ন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলা সুত্রে জানা যায়, “কিশোরীর নানী গত দুই বছর যাবৎ রাজাপুরের বড় কৈবর্তখালী সমবায় ক্লাব এলাকায় আশ্রায়ণের একটি ঘর পেয়ে সেখানে বসবাস করে আসছে। তিনি অসুস্থ থাকার কারনে তার মেয়ের ঘরের নাতনি এক সপ্তাহ আগে তার কাছে বেড়াতে আসে। গত ৯ সেপ্টেম্বর কিশোরীকে তার নানীর ঘর থেকে একই এলাকার ইউনুচ হাওলাদারের ছেলে পিকআপ চালক প্রেমিক রবিউল হাওলাদার ডেকে তার পিকআপে তুলে নিয়ে গিয়ে পর্যায়ত্রুমে ধর্ষণ শেষে রাত ৩টার দিকে তার নানী’র আশ্রয়ণের ঘরে পৌছে দিয়ে যায়। সেই সময় ওই স্থানে রাত্রীকালীন পাহাড়ায় ছিলো বড় কৈবর্তখালী সমবায় ক্লাব এলাকার রুহুল প্যাদার ছেলে মিরাজ প্যাদা ও করিম সিকদারের ছেলে রিপন সিকদার। রবিউল কিশোরীকে রেখে চলে যাওয়ার পরে মিরাজ ও রিপন কিশোরীর নানী’কে ঘর থেকে ডেকে বাইরে বের করে কথার ছলে রাখে। সেই ফাঁকে কৌশলে রিপন সিকদার ঘরে ডুকে জোর পূর্বক কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে রিপন ঘরের বাইরে এসে কিশোরীর নানী’কে কথায় ব্যাস্ত রাখে। সেই সুযগে মিরাজ প্যাদা ঘরে ডুকে কিশোরীকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এভাবে প্রায় ঘন্টাব্যাপী মিরাজ ও রিপন ওই কিশোরীকে পালাত্রুমে ধর্ষণ করে এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় ১২ সেপ্টেম্বর সকালে কিশোরীর নানী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় অনসার সদস্য আব্দুল শুক্কুর এর ছেলে মেহেদী অভিযুক্তদের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা উৎকোষ আদায় করে আমাকে দিবে বলে। কিন্তু আমাকে টাকা না দিয়ে ২০ হাজার টাকা মেহেদী ও ডালাই সুমন নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। বাকি ২০ হাজার টাকা স্থানীয় দোকানদার রাজ্জাক এর কাছে রাখে আমাকে দেয়ার জন্য। কিন্তু রাজ্জাক ২০ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকা আমাকে দিয়ে এলাকাত্যাগ করে ঢাকা পালিয়ে যেতে বলে হুমকি প্রদান করে। স্থায়ীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ সুমন লাখ টাকার বিনিময়ে গণধর্ষণের ঘটনা মিমাংসা করার জন্য দৌড়ঝাপ চালিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলক চন্দ্র রায় জানায় , কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তিন জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু হয়েছে। কিশোরীকে তার স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে এবং আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।