আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (৪ জুন) এক সরকারি নির্দেশনার মাধ্যমে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেন তিনি।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় মানসিকভাবে অক্ষম ছিলেন, অথচ এই তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন রাখা হয়েছিল। এমনকি, বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্তে বাইডেন আদৌ যুক্ত ছিলেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, এই ঘটনার পেছনের প্রকৃত সিদ্ধান্ত দাতাদের চিহ্নিত করতে হবে। প্রেসিডেন্টের আইন উপদেষ্টা, অ্যাটর্নি জেনারেল ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের অভিযোগ, বাইডেন অনেক সময় নথিপত্রে নিজ হাতে স্বাক্ষর না করে ‘অটোপেন’ নামক একটি যান্ত্রিক কলম ব্যবহার করতেন, যা বৈধতার প্রশ্ন তোলে। তার দাবি অনুযায়ী, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাক্ষর করা নির্বাহী আদেশগুলো ‘অবৈধ’ বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ জানতেই পারেনি কারা প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্র চালাচ্ছিলেন।
বাইডেনের মানসিক অবস্থা নিয়ে ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন তুলে আসছেন। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ও ট্রাম্প তাকে মানসিকভাবে অযোগ্য বলে দাবি করেন এবং বলেন, বাইডেন কেবলমাত্র নামমাত্র প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বাস্তবে অন্যরা প্রশাসনের মূল সিদ্ধান্ত নিতেন। তিনি অভিযোগ করেন, বাইডেনের আশপাশের লোকজন তার শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সম্পর্কে জেনেও তা গোপন রেখেছিলেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বইতেও উঠে এসেছে বাইডেনের স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগের দুর্বলতার কথা। বইটিতে উল্লেখ করা হয়, কখনো কখনো বাইডেন এমনকি ঘনিষ্ঠ পরিচিতদেরও চিনতে পারতেন না। একটি ঘটনায় বলা হয়, তিনি অভিনেতা এবং ডেমোক্র্যাটিক দলের বিশিষ্ট সমর্থক জর্জ ক্লুনিকে চিনতে ভুল করেছিলেন।
তার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হয় যখন জানা যায়, বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়েছে। এই তথ্য আগে থেকেই বাইডেনের ঘনিষ্ঠরা জানতেন বলে অভিযোগ উঠেছে, কিন্তু তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। ফলে ট্রাম্প ও তার সমর্থকদের অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে।
বাইডেনের স্বাস্থ্যের গুরুতর অবস্থা এতদিন গোপন রাখা হয়েছে, অভিযোগ ট্রাম্পেরবাইডেনের স্বাস্থ্যের গুরুতর অবস্থা এতদিন গোপন রাখা হয়েছে, অভিযোগ ট্রাম্পের
বাইডেনের প্রেসিডেন্সির শেষ দিকে বিভিন্ন বিতর্কে অংশগ্রহণে তার দুর্বলতা, সংবাদমাধ্যম এড়িয়ে চলা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধাগ্রস্ত আচরণকে তদন্তকারীরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন। তার সময়কার নীতিমালা ও নির্বাহী আদেশগুলোর পেছনে কারা সিদ্ধান্তে প্রভাব রেখেছিলেন এবং ‘অটোপেন’-এর মাধ্যমে কী ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অভ্যন্তরেও বাইডেনকে নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিলো। নির্বাচনের আগেই পার্টির অভ্যন্তর থেকে তাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত বাইডেন উপনির্বাচনের আগেই ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে মনোনয়ন দিয়ে নিজে সরে দাঁড়ান, তবে তিনিও ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি