কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার সাহেদল ইউনিয়নের বীরপাইকশা গ্রামের দরিদ্র রিক্সা চালক সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সাত বছরের শিশু মরিয়ম। সংসারে অভাবের তাড়নায় তাকে যেতে হয় কুমিল্লায় গৃহকর্মীর কাজে। দুই মাস আগে গৃহকর্মীর কাজ করতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরে শিশুটি। আজ বুধবার ২৮ অক্টোবর ভোরে গৃহকর্তা এলাহি শুভ (৩৪) ও তার স্ত্রী নাদরাতুল আহমেদ (২৩) শিশুটির লাশ নিয়ে আসেন বীর পাইকশা গ্রামের বাড়িতে।
পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়ে শিশু মরিয়মের মৃত্যু হয়েছে বলে জানালেও মরিয়মকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছেন পরিবার ও এলাকাবাসী। এই দাবির প্রেক্ষিতে হোসেনপুর থানা পুলিশ এলাহি শুভ ও তার স্ত্রী নাদরাতুল আহমেদকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।
এলাহি শুভ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের ভাদুরগর পূর্বপাড়া এলাকার মৃত শাহ আলমের ছেলে। তার শ্বশুরবাড়ি হোসেনপুর উপজেলার বীরপাইকশা গ্রামে। তার স্ত্রী নাদরাতুল আহমেদ বীরপাইকশা গ্রামের নূরু মিয়ার মেয়ে। এলাহি শুভ একটি বেসরকারি কোম্পানীতে চাকুরি করেন। চাকুরির সুবাদে এলাহি শুভ তার স্ত্রী নাদরাতুল আহমেদকে নিয়ে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার বুল্লিরপাড় এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। ওই ভাড়া বাসায় টুকটাক কাজের কথা বলে নাদরাতুল আহমেদ তার এলাকা থেকে দুই মাস আগে শিশু মরিয়মকে সেখানে নিয়ে যান।
বুধবার ভোর ৫ টায় স্বামী- স্ত্রী এলাহি শুভ ও নাদরাতুল আহমেদ মিলে একটি গাড়িতে করে মরিয়মের মরদেহ নিয়ে হোসেনপুর উপজেলার বীরপাইকশা গ্রামের বাড়িতে আসেন। সে সময় মৃত মরিয়মকে তার মা কুলসুম আক্তারের কাছে রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় মা কুলসুম আক্তারের আর্তচিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে। মরিয়মের শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ণ দেখে মরিয়মকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে এ অভিযোগে স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করেন।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরিয়মের মরদেহ উদ্ধার সহ স্বামী- স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে হোসেনপুর থানার ওসি শেখ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মরিয়মের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে সেটি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাউদকান্দি থানায় পাঠানো হবে। বর্তমানে অভিযুক্ত স্বামী- স্ত্রী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।