রাজনীতি ডেস্ক:
ফরিদপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্লাহকে উদ্দেশ্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরী বলেছেন, কই ছিলেন করোনার সময়? দশ বছরে আসেন নাই গ্রামেগঞ্জে। আমরা মাঠে ছিলাম। পরিবারের কথা চিন্তা না করে, মাঠে ছিলাম। আপনি ভণ্ড নেতা, রাজাকার। লজ্জা করে না, এই মুখ নিয়ে ভোট চাইতে আসেন?
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) ফরিদপুর-৪ আসনের ১নং মানিকদহ ইউনিয়নে নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নির্বাচনী জনসভায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। বিকেলে ১নং মানিকদহ ইউনিয়ন আয়োজিত জনসভায় অংশ নেন তিনি। সমাবেশস্থল ছিল নেতা-কর্মীতে পূর্ণ। সমাবেশস্থলে গানের তালে নেচে নিক্সন চৌধুরীকে বরণ করে নেন তারা।
সমাবেশের এক পর্যায়ে নিক্সন চৌধুরীর সাথে যোগদান করেন স্থানীয় রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকে। আগতরা বলেন, নিক্সন চৌধুরী এবার নির্বাচনে হেট্টিক করবেন।
এরপর জনসভায় নিক্সন বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি পর মোনাফেকদের বিচার হবে। আমরা উন্নয়ন করছি, তার প্রমাণ আজকের জনসভার জনসমাগম। এখন খেলাধুলা করে লাভ নাই, টাইম শেষ। হাফ টাইম শেষ। ১০ বছর কষ্ট করছি, তার ফসল আমার সামনে।
তিনি জাফর উল্লাহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কই ছিলেন? করোনার সময়? দশ বছরে আসেন নাই। আমরা মাঠে ছিলাম। পরিবারের কথা চিন্তা না করে মাঠে ছিলাম। আপনে ভণ্ড নেতা। লজ্জা করে না, এই মুখ নিয়ে ভোট চাইতে আসেন? জাফরউল্লাহ, মিথ্যুক, ভণ্ড ও রাজাকার।
এদিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্লাহ।
তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নই, ফরিদপুরের এসপি চান না, এখানে নৌকার নির্বাচন হোক। তিনি চান না সদরপুর-ভাঙ্গাতে নৌকা জিতুক। টাকার জন্য তিনি নৌকা হারাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছেন। দুপুরে সদরপুরে কর্মীসভায় বক্তৃতাকালে এসপির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তিনি। ফরিদপুরের সদরপুর স্টেডিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাজী জাফর উল্লাহ নিজ গ্রাম ভাঙ্গা উপজেলার কাউলীবেড়া থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে গাড়িযোগে সদরপুরে পৌঁছান। এরপর নির্বাচনী কর্মীসভায় যোগ দেন এবং উপস্থিত জনতার সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘আমি সন্তুষ্ট নই। কারণ আমি দেখছি সদরপুরে খুন-রাহাজানি হচ্ছে। সদরপুরের চর বলাশিয়ায় নৌকার এক কর্মীকে কুপিয়ে মাথা দুই টুকরা করে দিয়েছে। সে ট্রমা সেন্টারে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অথচ আমরা যখন বিষয়টি থানাকে জানাই, তারা বলে মামলা নিতে হলে ওদেরও (অপরপক্ষের) মামলা নিতে হবে। তার মানে তারা সম্পূর্ণরূপে নিক্সনের (প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী) পক্ষে।’
তিনি বলেন, ‘‘তিনি (এসপি) লাইন দিয়েছেন ফরিদপুরের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে। কারণ ফরিদপুরের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবাই টাকাওয়ালা। ‘টাকা আছে যেখানে, আমাদের প্রশাসন এসপি আছে সেখানে’। আমরা যুদ্ধ লড়াই করে মাঠে আছি। গরিব-দুঃখী মানুষ ৭ তারিখে নৌকায় ভোট দিয়ে প্রমাণ করবে। মানুষের শক্তির সঙ্গে তারা পারবে না।’’
কাজী জাফর উল্লাহ তার বক্তব্যে প্রতিপক্ষ নিক্সন চৌধুরীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘আমার মা একজন ফকির ছিল, বলেছেন নিক্সন। তিনি এও বলেছেন, আমি নাকি ফকিন্নির ছেলে। আমাকে সে … করে মান্দার গাছে উঠাবে। সে মানুষকে মানুষ হিসেবে মূল্য দিতে চায় না।’
আগামী ২৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করছি বর্তমান সরকারের আমলে যেভাবে ভাঙ্গার উন্নয়ন হয়েছে, সেভাবে সদরপুর ও চরভদ্রাসনেরও উন্নয়ন হবে। আমার তাদের মতো টাকা নেই। তবে আমি সততার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে চাই।’