হোম জাতীয় জাপানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা চলছে

জাতীয় ডেস্ক:

বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে প্রাথমিকভাবে দুই দেশের মধ্যে ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষর হবে। এজন্য আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। এসময় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ জাপান থেকে ২ হাজার ২৯ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ১ হাজার ৯০১ দশমিক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য জাপানে রফতানি করে। জাপান বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা। পণ্য ছাড়াও সেবা ও বিনিয়োগ খাতেও জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে।

এজন্য বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে দুই দেশের মধ্যে ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ ও যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-জাপান ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট সম্পাদনের লক্ষ্যে গঠিত যৌথ সমীক্ষা গ্রুপ গত এপ্রিল, জুলাই ও সেপ্টেম্বরে তিন রাউন্ডের সভায় মিলিত হয়। সভাগুলোতে উভয় দেশ প্রস্তাবিত ইপিএ সম্পাদনের লক্ষ্যে স্কোপ এবং কভারেজ হিসেবে ১৭টি সেক্টর চিহ্নিত করে। সরকারি, বেসরকারি, একাডেমিয়া ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্ততার মাধ্যমে যৌথ সমীক্ষা গ্রুপ তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ ডিসেম্বর উভয় দেশ যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষার প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ইপিএ স্বাক্ষরের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে নেগোসিয়েশন প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে নেগোসিয়েশন শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা যৌথভাবে বাংলাদেশ ও জাপান থেকে করা হয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুতই ট্রেড নেগোসিয়েশন কমিটি নেগোসিয়েশন সভায় মিলিত হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। যার মধ্যে ২০২৬ সালের পরে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রফতানিকালে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা হারানো অন্যতম হতে পারে।

এর ফলে দেশের রফতানি পণ্যকে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে এবং রফতানি বাজার সংকোচনের আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে দেশের রফতানি বাজার সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন