মোংলা প্রতিনিধি :
নভেম্বর থেকে জুন মাস পর্যন্ত এই আট মাস সুন্দরবন উপকূলে জাটকা ইলিশের প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ কারণে মোংলার এক হাজার ১০ জন নিবন্ধিত জেলে নদীর ধারে কাছেও যেতে পারবেনা। তাদের তাহলে এই আট মাস সংসার চলবে কিভাবে? জীবিকার উৎস্য কি?
মোংলা উপজেলা মৎস্য অফিস বলছে, আছে তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা আছে। সরকারের পক্ষ থেকে এই আট মাসে দুই দফায় জেলেদের জনপ্রতি ৮০ কেজি করে ১৬০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু মোংলা উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের নিবন্ধিত ২৭০ জন জেলে এখনও প্রথম দফারই চাল পায়নি। অথচ এই উপজেলার অন্য দুটি ইউনিয়নে দ্বিতীয় দফার চালও বরাদ্দ হয়ে গেছে, কিছু জেলে সেই চালও পেয়েছেন। কেন জেলেরা প্রথম দফার চাল পায়নি এ নিয়ে রবিবার (৩০ এপ্রিল) কথা হয় উপজেলা জেষ্ঠ্য মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের সাথে।
তিনি বলেন, ‘আমার এখানে চাঁদপাই, বুড়িডাঙ্গা, সোনাইলতলা এবং পৌর শহরের কিছু অংশের মোট ১০১০ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। জাটকা ইলিশের চলমান নিষেধাজ্ঞায় এসব জেলেদের জন্য দুই দফায় এক লাখ ৬১ হাজার ৬০০ কেজি চাল বরাদ্দ হয়েছে। প্রথম দফায় (ফেব্রæয়ারি, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাস) বুড়িডাঙ্গা, সোনাইলতলা ও পৌরসভার জেলেদের চাল দেওয়া হয়ে গেছে। দ্বিতীয় দফার চালও ঈদের দুই সপ্তাহ আগে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু এলাকার জেলেরা দ্বিতীয় দফার চালও পেয়েছেন। কিন্তু চাঁদপাই ইউনিয়নের ২৭০ জন জেলেরা এখনও প্রথম দফারই চাল পায়নি স্বীকার করে তিনি দোষ চাপালেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ওপর। বলেন, তাকে একাধিকবার বলা হলেও তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেননা। তার গাফিলতির অসহায় জেলেরা প্রতিদিন তার অফিসে এসে ধর্ণা দিচ্ছেন’।
এ বিষয়ে চাঁদপাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোল্লা তরিকুল ইসলাম বলেন, জেলেদের তালিকা প্রস্তত করতে একটু সময় লেগেছে। দু’ চারদিনের মধ্যে দিয়ে দিব। তার এলাকার চাল পাবে ২৭০ জন জেলে।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে মোংলা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দীপকংর দাশ বলেন, ‘আমি এ বিষয়টি জানতাম না, এখনই চেয়ারম্যানকে বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি’।
এদিকে ইউএনও’র সাথে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলার ৫ মিনিট পর চাঁদপাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোল্লা তরিকুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে ফোন করে বলেন, ‘নিউজ করে বিপদে ফেইলেন না, বুধবার জেলেদের চাল দিয়ে দিব’।
জাতীয় মৎস্যজীবি জেলেদের মোংলার সভাপতি বিদ্যুৎ মন্ডল বলেন, প্রতিবারই নিষেধাজ্ঞার সময়ে তাদের হাতে চাল পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। অন্যান্য ইউনিয়নের জেলেরা চাল পেলেও আমরা পাইনি। এনিয়ে প্রতিদিন উপজেলা মৎস্য অফিসে ঘোরাঘুরি করেও কোন লাভ হচ্ছেনা। ছেলে মেয়েদর নিয়ে কিভাবে সংসার চলে বলেন?
দক্ষিন কাইনমারীর জেলে শিমন বিশ্বাস ও কিতর বাড়ই বলেন, নিষেধাজ্ঞায় প্রনোদনার চাল না পেয়ে এখন তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। অবিলম্বে সরকারিভাবে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল পেতে চান তারা।