হোম অন্যান্যসারাদেশ জরাজীর্ণ স্থাপনা,নেই ডাক্তার করোনাকালীন চিকিৎসাসেবা নেই নেহালপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

জরাজীর্ণ স্থাপনা,নেই ডাক্তার করোনাকালীন চিকিৎসাসেবা নেই নেহালপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

কর্তৃক
০ মন্তব্য 171 ভিউজ

 রিপন হোসেন সাজু, মণিরামপুর (যশোর) :

যশোরের মণিরামপুরের নেহালপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনের দৈন্যদশা দীর্ঘদিনের। জরাজীর্ণ ভবন ছেড়ে পাশের পরিবার পরিকল্পনা ভবনে নামমাত্র কার্যক্রম চলছে প্রতিষ্ঠানটির। শুধু ভবনের বেহাল দশা নয়,এই কেন্দ্রে চিকিৎসক নেই গত পাঁচ বছর। ফলে কার্যত অকেজো হয়ে পড়েছে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এখানে করোনাকালীন কোন চিকিৎসা সেবা মিলছে না।

চিকিৎসাসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে একজন ডাক্তার, একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো), একজন ফার্মাসিষ্ট, একজন পিওন নিয়ে ক্ষমতাশীন সরকারের ১৯৯৬-২০০১ শাসনামলে গড়ে ওঠে নেহালপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। নেহালপুর, কালিবাড়ি, মশিয়াহাটি, মনোহরপুর সহ আশপাশের এলাকার মানুষের সেবায় মণিরামপুর সদর থেকে ১৬ কি.মি. দূরে নেহালপুর বাজারে গড়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে ধারাবাহিক চিকিৎসকের দেখা পাননি স্থানীয়রা।

দীর্ঘদিন ধরে একজন সেকমো দিয়ে চলেছে চিকিৎসা কার্যক্রম। এরপর গত ১৪ বছর ধরে একজন ফার্মাসিষ্ট দিয়ে চলছে কেন্দ্রটি। তাও তিনি ডিউটি করেন ইচ্ছেমত। নিয়োগ পেয়ে যেই ডাক্তারই আসেন; থাকেননা বেশিদিন, করেননি নিয়মমেনে দায়িত্বপালন। সরেজমিন সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে দশটার দিকে গিয়ে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি জরাজীর্ণ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। খোঁজনিয়ে জানা গেছে পাশের পরিবার পরিকল্পনা ভবনে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চলছে।

সেখানে গিয়ে কয়েকজন রোগীর দেখা মিললেও স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির জন্য ব্যবহৃত তিনটি কক্ষের দরজা বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে জানা গেছে একজন ফার্মাসিষ্ট রোগী দেখছিলেন। তিনি বাইরে চা পান করতে গেছেন। পরে কথা হয় ফার্মাসিষ্ট সমরেন্দ্র তরফদারের সাথে। কথার ফাঁকে তাকে প্যারাসিটামল, মেট্রো, এন্টাসিড দিয়ে সেবা দিতে দেখা গেছে। সমরেন্দ্র বলেন, ১৪ বছর এখানে আছি। ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল পর্যন্ত ডা. মঞ্জুরুল মুরশিদ দায়িত্বপালন করেছেন। এসএম সাইফুল ইসলাম নামে একজন সেকমো ছিলেন।

তিনিও ১৮ সালের ১২ জুন কেন্দ্র ছেড়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত ডা. আশরাফুর রহমান সপ্তাহে দুই-তিন দিন করে এসেছেন। এখন আর আসেন না। তিনি বলেন, এখানে তিন কক্ষ বিশিষ্ট টিনসেডের একটি ভবন আছে। অনেক আগ থেকে তা জরাজীর্ণ। পাঁচ বছর হয় সেটা ছেড়ে আমরা পরিবার পরিকল্পার ভবনে উঠেছি। কেউ না থাকায় নিজেই রোগী দেখছেন জানিয়ে সমরেন্দ্র বলেন, ২৪-২৫ রকমের ওষুধ থাকে। এখন খাবার স্যালাইনসহ পাঁচ প্রকারের ওষুধ আছে। প্রতিদিন ২০-২৫ জন করে রোগী দেখি। ওষুধ থাকলে ৬০-৬৫ জন করে রোগী আসে।

নেহালপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, রোগ হলে গ্রাম্য ডাক্তার দেখাই। পাঁচ বছর আগে নতুন ডাক্তার এসেছে শুনে তাকে দেখতে উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। এরপর কোন ডাক্তার আছে কিনা বলতে পারব না। হাসপাতালের ভবনের বেহাল দশা। আশপাশের নোংরা জলাবদ্ধ পরিবেশ দেখলে মনে হয় ডেঙ্গু করোনার ভাইরাস সব হাসপাতালে। জানতে চাইলে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, নেহালপুর উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার আশরাফুর রহমানের নিয়োগ। করোনাকালীন তাকে সেখান থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। এখন তিনি সিভিল সার্জন অফিসে ডিউটি করছেন। ওই কেন্দ্রে সেকমোর পোষ্টিং নেই।

কেন্দ্রটির জরাজীর্ণ ভবনের বিষয়টি একাধিকবার উপরে জানানো হয়েছে। এই ব্যাপারে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনের সাথে কথা বলতে তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হয়। তিনি মিটিংয়ে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন