খুলনা অফিস :
পাইকগাছার ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত হত্যা মামলা সিআইডিতে স্থান্তর করা হয়েছে। মামলায় আওয়ামী পরিবারের সন্তান নিরিহ শিক্ষার্থীকে আসামি করায় এলাকাবাসি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকেই মামলা থেকে বাদ পড়েছেন এমন অভিযোগও করেছেন অনেকেই। সাঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত জড়িতদের আসামি করে নিরিহ ব্যক্তিদের মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
উল্লেখ্য, উপজেলার পুরাইকাটি গ্রামের অচিন্ত ঘোষের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত ঘোষ (২৪) কে গত ৭ অক্টোবর রাতে উত্তর খড়িয়া সুকুমার মন্ডলের বাড়ির সামনে সড়কের উপর দুর্বৃত্তরা পিটিয়ে আহত করে। খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৪ অক্টোবর সন্ধা ৬টার দিকে প্রান্ত’র মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় প্রান্ত’র ভাই অনুপ ঘোষ বাদি হয়ে সাইফুর (২৫), আলমগীর (২৫), হৃদয় (১৮), বিপ্লব (২০) ও ভীম (২০) সহ ৫ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করে। যার নং-১২ তাং-১৬-১০-২০২০। মামলাটি পরে সিআইডি’তে স্থান্তর হয়। এ মামলার এজাহারে কাউকে সাক্ষী করা হয়নি। অপর দিকে এলাকার নিরিহ ছেলেদের মামলায় আসামী করা হয়েছে এমন অভিযোগ উঠেছে।
মামলার ৩নং আসামী হৃদয় ও ৪নং আসামী বিপ্লব এ ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে দাবী করেছেন তাদের পরিবার। ভিলেজ পলিটিক্সকে কেন্দ্র করে তাদের আসামী করা হয়েছে বলে এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন। বিশেষ করে হৃদয় হচ্ছে আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তার দাদা কেসমত আলী গাইন আওয়ামী লীগের সক্রিয় একজন কর্মী। দাদী মৃত কবিরন্নেছা ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। পিতা বাবু গাইন ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। চাচা কামরুল গাইন ইউনিয়ন কৃষকলীগের আহবায়ক। হৃদয় একজন শিক্ষার্থী। সে খুলনা সুন্দরবন কলেজে ডিগ্রী পড়াশুনা করছে। করোনার কারণে কলেজ বন্ধ থাকায় বর্তমানে বেশিরভাগ সময় কুমখালীস্থ নিজেদের ঘেরে থাকে। সে সক্রিয়ভাবে কোন রাজনীতি করে না। পাশাপাশি কোন বখাটে ছেলেদের সাথে মেশে না। হৃদয়ের পিতা বাবু গাইন জানান, ঘটনার ২ দিন আগে হৃদয় ফকিরাবাদ এলাকায় মটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়। যার ফলে ঘটনার দিন সে অসুস্থ্য অবস্থায় বাড়িতেই অবস্থান করছিল। এ ঘটনার সাথে হৃদয়ের কোন সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন কথা এলাকার কেউ বলতে পারবে না।
আমাদের হেয় এবং হয়রানী করার জন্যই তাকে আসামী করা হয়েছে। বুধবার সরেজমিন গেলে ঘটনার অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসে। প্রেমজ সম্পর্কের সূত্র ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন। যদিও যে বিষয়গুলো মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়নি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গড়ইখালী বাজার কমিউনিটি সেন্টারে উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে উক্ত সভায় যাওয়ার পথে সন্ধ্যার আগে মৌখালী এলাকা থেকে প্রান্ত মায়ের ঔষধ কেনার কথা বলে দলীয় নেতাকর্মীদের থেকে পৃথক হয়ে যায়। এরপর রাতে গড়ইখালী খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা জনৈক ব্যক্তির স্কুল পড়–য়া মেয়েকে তাদের বাড়িতে রেখে চলে আসার সময় মটর সাইকেল ষ্ট্যান্ড থেকে এলাকার কতিপয় যুবকরা প্রান্তকে চোর বলে ধাওয়া করে। মাঝপথ থেকে অনেকেই মুঠোফোনে বিভিন্ন এলাকায় প্রান্তকে আটকে রাখার বার্তা দেয়। এক পর্যায়ে খড়িয়া নামক স্থানে সড়কে ওই এলাকার কতিপয় লোকজন বাঁশের বেরিকেট দিলে প্রান্ত পড়ে যায়।