নিউজ ডেস্ক:
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার চিঠি পেলে ও কমিশন আলোচনা করে ভোটের তারিখ থেকে মাস দুয়েক আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। দ্রুত চিঠি পেয়ে যাবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন সিইসি। আর না পেলেও ইসি আগে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকলেও আমাদের প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা অর্জন বড় চ্যালেঞ্জ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে। আমরা আয়নার মতো স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দিতে চাই।
তিনি বলেন, মানুষকে আস্থার জায়গায় দিতে হবে। আপনারা এবার বিশ্বাস রাখুন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের দিনের মত উনি একটা ইলেকশন দেখতে চান; আমরা সেটা সামনে রেখেই কাজ করছি।
সিইসি বলেন, আগে চাপ থাকতো কোন দলের পক্ষে কাজ করার জন্য। এখন চাপ থাকবে সম্পূর্ণ প্রফেশনালি নিউট্রালি কাজ করার জন্য। এছাড়া আমরা এখানে (নির্বাচন ভবন) সেন্ট্রাল কমিউনিকেশন করবো। যাতে ফিল্ডের থেকে কেউ যদি চাপাচাপি করে, তখন যেনও আমাদের সঙ্গে কমিউনিকেট করতে পারে।
এআই এর অপব্যবহার রোধ করাও বড় চ্যালেঞ্জ মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিটা কোনও সমস্যা সৃষ্টি করবে না। আমার জন্য এখন বড় দুশ্চিন্তা হয়ে গেছে মিস ইউজ অফ এআই। এআই ভুল তথ্য দিচ্ছে। কালকে না পরশু দেখলাম, আমার ছবি আর ড. ইউনূসের ছবি জুড়ে দিয়ে বললো—নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশন।
এসময় ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিতি বাড়ানোকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানান তিনি। বলেন, আমরা নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। যেন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে ভোট করতে পারবে কী না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম তো নিষিদ্ধ। তবে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ভোট দিতে পারবে। এতে কোনও অসুবিধা নাই।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বড় প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো শেষ হয়ে যাবে মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের সংসদীয় প্রকাশ করা হয়েছে, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কাজও চলছে, কেনাকাটাও চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বড় প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।
রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের ঘোষণা এলেও কবে তফসিল হবে—সে বিষয়ে ডিসেম্বরের শেষার্ধের ইঙ্গিত দেন সিইসি। তিনি বলেন, ভোটের তারিখের দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। যেদিন পোলিং ডেট হবে, তার দুই মাস আগে তফসিল হবে। আগে চিঠিটা পেয়ে নিই।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, যেন-তেন একটা নির্বাচন করে আপনারা জেতার চেষ্টা করবেন না। আল্লাহর দোহাই, আমাকে সাহায্য করুন। আমি একটা সুন্দর ক্রেডিবল একটা ট্রান্সপারেন্ট ইলেকশন দিতে চাই; আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া পারবো না।
তিনি বলেন, প্লেয়াররা যদি সবাই ফাউল করার নিয়তে মাঠে নামে এখন রেফারির পক্ষে সে ম্যাচ পণ্ড হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব না। লালকার্ড কয়জনকে দেখাবেন আপনি? সুতরাং যারা খেলবেন তাদের তো দায়িত্ব আছে বিশাল। আমি এই মেসেজটা রাজনীতির দলগুলোকে দিতে চাই। তারা একটা মেজর স্টেক হোল্ডার। আমাদের দায়িত্ব হবে খেলার মাঠটা তাদের জন্য সমান করে দেওয়া। তারা যেনও সুন্দর একই অপরচুনিটি পায় সেই চেষ্টাটা আমরা করছি এবং করবো।