হোম সিলেটমৌলভীবাজার চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ডের পথে বাংলাদেশ

চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ডের পথে বাংলাদেশ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 146 ভিউজ

চৌধুরী ভাস্কর হোম, মৌলভীবাজার :

অনুক‚ল আবহাওয়া, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত, সুষম তাপমাত্রা এবং চা বোর্ডের সঠিক নজরদারির ফলে চলতি মওসুমে দেশে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট সূত্রে জানা গেছে, চা শিল্পে বছরে প্রায় বিশ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন হয়। গত জুন, জুলাই, আগস্ট মাসে চায়ের ভরা মওসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। যা চা শিল্পের জন্য ব্যাপক সুফল বয়ে এনেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসেও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে গত ২১শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চা শিল্পা লে এক হাজার নয়শ’ ত্রিশ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে জানুয়ারি মাসে বৃষ্টি না হলেও ফেব্রুয়ারি মাসে একশ’ মিলিমিটার, মার্চে ১১৩ মিলিমিটার, এপ্রিলে ৯৯ মিলিমিটার, মে মাসে ১৮৬ মিলিমিটার, জুনে ৯৯৫ মিলিমিটার, জুলাইয়ে ৩০৭ মিলিমিটার, আগস্টে ৩৭৫ মিলিমিটার এবং সেপ্টেম্বর মাসে ২১শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এ ভরা মওসুমে বৃষ্টিপাতের ফলে চা গাছের ফ্লাস (কুঁড়ি) দ্রুত বের হয়েছে।প্লাকিং বা পাতা চয়নের পরিমাণ বাড়বে। চা গাছ সতেজ থাকবে। বেশি চা পাতা উত্তোলনের ফলে চায়ের উৎপাদনও বাড়বে।

চা বোর্ড জানায়, চলতি মওসুমে দেশের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০২ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। গত ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত দেশে গত বছরে একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৫৪ লাখ ৯০ হাজার কেজি বেশি চা উৎপাদন হয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে- চলতি বছর চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এবং শিল্পে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে। এবার এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে দেশের চা শিল্পের ১৬৯ বছরের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে। চা শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা জানিয়েছেন, বর্তমানে যে হারে চা উৎপাদন হচ্ছে তা থেকে সহজেই অনুমান করা হচ্ছে যে, দেশে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ডের পথে রয়েছে বাংলাদেশের চা শিল্প। চা বোর্ড সূত্র জানান, ২০২১ সালে দেশে সর্বোচ্চ ৯৫ দশমিক ৫১ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৯ কোটি, ৬৫ লাখ ১০ হাজার কেজি চা উৎপাদন করে দেশের চা শিল্পের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল।

আতিয়াবাগ চা বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম জমাদ্দার জানান, চলতি মওসুমের শ্ররু থেকে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া চায়ের অনুক’লে থাকায় চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধিপাবে। আমাদের আকিজ গ্রুপের চারটি বাগানেই চায়ের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে। আমাদের মত প্রতিটি বাগানেই চায়ের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বেশি হবে।

বাংলাদেশীয় চা সংসদ সিলেট ভ্যালি সভাপতি ও শ্রীমঙ্গল জেমস ফিনলের ভাড়াউড়া চা ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোহাম্মদ শিবলী জানান, দুটি পাতা ও একটি কুঁড়িতে ভরপুর চায়ের গাছ। চা বাগানে এখন চায়ের ভরা মৌসুম। যার ফলে বাগানে বাগানে চা পাতা চয়ন করতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন চা শ্রমিকরা। লক্ষমাত্রা অর্জনে আমরা সক্ষম হবো।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ও চা বিজ্ঞানী ড. রফিকুল হক জানান, এবার সব রেকর্ডকে পেছনে ফেলে ১০২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের মাধ্যমে দেশে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন