বাণিজ্য ডেস্ক :
কার হাতে চালের বাজারের লাগাম? কে চালাচ্ছে দাম বৃদ্ধির পাগলা ঘোড়া? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মাঠে নেমেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। তদারকি বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। রাজধানীতে অভিযানকালে দোকান রেখে সটকে পড়েন অনেক ব্যবসায়ী। অনিয়মের কারণে জরিমানাও গুণতে হয় দোকানিদের। কিন্তু এ অভিযানেও চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। বাড়তি দরেই ক্রেতাদের চাল কিনতে হচ্ছে।
কে নিয়ন্ত্রণ করছে চালের বাজার? এমন প্রশ্ন এখন নিত্যপণ্যের বাজারে আসা ভোক্তাদের।
হিসাব বলছে, উৎপাদনে ঘাটতি নেই। তাহলে কেন প্রতিদিনই বাড়ছে চালের দাম? এমন প্রশ্নের উত্তরে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, মিল গেটে ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ছে। বাড়ছে সরবরাহ সংকট। এতেই অস্থির বাজার। যা ভোক্তাদের ভোগান্তিতে ফেলছে।
বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো চাল মজুত করেছে। তাছাড়া এ ভরা মৌসুমে চালের দাম এত বেশি হয় নাকি। এখন বাজারে চালের দাম কমার কথা। কিন্তু উল্টো চালের দাম বাড়ছে। মিলগেট থেকে বলা হচ্ছে, ধানের ফলন কম এবং চালের উৎপাদনও কম। চালের অর্ডার দেওয়া হলে তারা নিচ্ছেন না। প্রতি ঘণ্টায় দাম বাড়াচ্ছেন তারা। সকালে এক দাম, বিকেলে এক দাম, আবার সন্ধ্যায় ফোন দিলে আরেক দাম।
এদিকে তেলের পর চালের দাম বাড়ায় হতাশ একজন ক্রেতা জানান, তেলের দাম কই ছিল, এখন কই উঠেছে। চালের দামও ৮ থেকে ১০ টাকা বেশি। এখন ধানের মৌসুমেও যদি এত বেশি দামে চাল কিনতে হয়, শুধু তো চাল আর তেল না, সব কিছুর দামই বাড়তি।
ব্যবসায়ীদের এমন দাবির সত্যতা যাচাই করতে ও সমস্যার গোড়া খুঁজে বের করতে প্রথম পর্যায়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় বাজারে অভিযান শুরু করেছে। বুধবার (১ জুন) রাজধানীর ৫টি পয়েন্টে তদারকি অভিযান চালানো হয়।
এসময় কারওয়ানবাজারের অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা করার বৈধতা দেখাতে পারেননি। দোকান থেকে সটকেও পড়েন অনেকে। এসময় পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বাজার অভিযানকালে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে উপ-সচিব মর্জিনা আক্তার বলেন, ব্যবসায়ীরা আইনে নিয়ম নীতি মেনে ব্যবসা করছেন কি না, আমরা আজ সেটি দেখছি। আমি এখানে তিন দোকান দেখলাম। তাদের কারও লাইসেন্স নেই।
ভোক্তা ভোগান্তির দায় মিলগেটে চাপানো হলেও কম যাচ্ছেন না খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরাও। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অভিযানে এমন প্রমাণ মেলে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আইন অমান্যের অভিযোগে তিনটি দোকানকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রয়োজনে আরও কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, পাইকারি পর্যায়ে বুধবারও রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি ব্রি-২৮ চাল ৫৪ টাকায়, মিনিকেট ৬৪ থেকে ৬৬ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৮২ থেকে ৮৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা খুচরা পর্যায়ে আরও ৩ থেকে ৫ টাকা বেশিতে বিক্রি হয়।
