আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান রাজধানী কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর দেশ ছেড়ে পালান দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এদিকে পালানোর সময় অর্থ বোঝাই চারটি গাড়ি এবং একটি হেলিকপ্টার নিয়ে গেছেন তিনি।
আফগানিস্তানে রুশ দূতাবাস জানিয়েছে কাবুল ছেড়ে পালানোর সময় আশরাফ ঘানি চারটি গাড়ি এবং হেলিকপ্টার ভর্তি অর্থ নিয়ে পালিয়েছেন। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা আরআইএর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।
কাবুলে রুশ দূতাবাসের একজন মুখপাত্র নিকিতা ইশচেঙ্কো বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, অর্থ বোঝাই চারটি গাড়ি ঘানি নিয়ে গেছেন। এছাড়া হেলিকপ্টার বোঝাই করে অর্থ নেওয়া হয়েছে। তবে কিছু অর্থ নেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ হেলিকপ্টারে আর জায়গা ছিল না। বাড়িতেই অর্থ পড়েছিল। ইশচেঙ্কো জানান, একজন প্রতক্ষ্যদর্শী তাকে এ তথ্য দিয়েছেন।
এদিকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, আশরাফ ঘানি তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছেন। তার সরকারি কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য দেওয়া হলেও তাজিকিস্তান খবরটি অস্বীকার করেছে।
এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জি নিউজ জানায়, ঘানির বিমান তাজিকিস্তান নামার অনুমতি না পাওয়ায় বিমান ঘুরিয়ে তিনি আপাতত ওমানে পৌঁছেছেন। তবে ওমান সরকার তাকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে কিনা, সেটা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। ওমানে ঘানি অবশ্য একা নন। তর সঙ্গে রয়েছেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামিদুল্লা মোহিব।
জি নিউজ জানায়, ঘানির যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছিল। ২০১৪ সালে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে, সেই নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন তিনি। তবে তার স্ত্রী এবং দুই সন্তান আমেরিকার নাগরিক। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রের বরাতে জি নিউজ জানাচ্ছে, ঘানি ওমান থেকে যুক্তরাষ্ট্রেও রওনা দিতে পারেন।
এদিকে দেশ ছাড়ার পর রোববার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ঘানি বলেন, রক্তের বন্যা এড়াতে দেশ ছাড়ার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বিবিসি জানায়, দেশ ছাড়ার পর এটাই আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্টের প্রথম মন্তব্য ছিল।
আশরাফ ঘানি বলেন, ‘আমার উচিত ছিল সশস্ত্র তালেবানের মুখোমুখি হওয়া। অথবা গত ২০ বছর ধরে যে দেশকে রক্ষা করতে জীবন উৎসর্গ করেছি, সেই প্রিয় দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া।’
তালেবান যোদ্ধাদের মুখোমুখি হওয়ার পরিস্থিতির বিষয়ে আশরাফ ঘানি বলেন, ‘এতে অগণিত দেশবাসী মারা যেত। ধ্বংসের মুখোমুখি হতো কাবুল শহর। তালেবান কাবুলের লোকদের ওপর হামলা করত। তাই রক্তের বন্যা এড়াতে দেশ ছাড়াকে শ্রেয় মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তালেবান তলোয়ার ও বন্দুকের বিচারে জিতে গেছে। ইতিহাস কখনো অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দেয়নি এবং দেবেও না। আমি সব সময় আমার জাতির সেবা করে যাব।’
অন্যদিকে, আফগানিস্তানের আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এখনো দেশেই রয়েছেন। আফগানিস্তানে পূর্ণ এবং সার্বিক সরকার গঠনের জন্য তালেবানের সাথে সমঝোতা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।