জাতীয় ডেস্ক :
চাকরিবিধি মেনে ও প্রতিষ্ঠানের ‘ভাবমূর্তি রক্ষায়’ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন দুদক আইন এবং কর্মচারী চাকরি বিধিমালা-২০০৮ রয়েছে। সেখানে কর্মচারী, কর্মকর্তারা কী কাজ করবেন, কীভাবে করবেন সেটা বলা আছে। গতকাল যেটি হয়েছে, জনাব শরীফ তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের চাকরিবিধি অনুযায়ী যে বিধি-বিধান মানা প্রয়োজন, সেগুলো অব্যাহতভাবে লঙ্ঘন করেছেন। যে কারণে দুদক মনে করে তার ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে এবং সবাই যাতে সঠিকভাবে কাজ করেন সেই লক্ষ্যে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করেছে। এটি শুধু কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়, এটি প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তির বিষয়।
দুদক সচিব বলেন, উনি এই বিধি-বিধানের বাইরে অনেক কাজ করেছেন। যেটা আমি পাবলিকলি বলতে চাই না। ফলে দুদক মনে করে ভাবমূর্তি রক্ষার্থে সবার স্বার্থে ৫৪ এর ২ ধারা এখানে প্রযোজ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। বিভাগীয় মামলা চালু আছে। অনেক অভিযোগ আসছিল, অনেক এসেছে।’
‘আপনারা জানেন, উনি একটা বদলির বিষয়ে, তদন্তকালে, অনুসন্ধানকালে যে টাকা উদ্ধার হয়েছিল, সে বিষয়ে কাজ করছিলেন। হাইকোর্ট থেকেও এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। চাকরিবিধি পরিপন্থী হওয়ার কারণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর সেই টাকা বিধি মোতাবেক যথা জায়গায় আছে।’
এদিকে, শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন তার সহকর্মীরা। তারা বলছেন, শরীফ উদ্দিন সৎ ও সাহসী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
মানববন্ধনের বিষয়ে সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা আইন মেনেই কাজ করেছি। কমিশন মনে করেছে তিনি চাকরিবিধি পরিপন্থী কাজ করেছেন এবং অব্যাহতভাবে করছেন। ফলে অপসারণ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। আর মানববন্ধনের বিষয়টি আমার সামনে ঘটেনি। তবে, কয়েকজন আমার কাছে এসেছিলেন আদেশটি পুনঃবিবেচনার অনুরোধ জানাতে।’
গত বছরের জুন মাসে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক, সেসব মামলার বাদী ছিলেন শরীফ।
অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) বিভিন্ন অভিযোগ নিয়েও তদন্ত করেন শরীফ।
এরপর গত ৩০ জানুয়ারি প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন শরীফ উদ্দিন। জীবননাশের হুমকি পাওয়ার ১৬ দিনের মাথায় চাকরি খোয়ালেন শরীফ।