বাণিজ্য ডেস্ক:
অনিয়ম-দুর্নীতির পাশাপাশি সিন্ডিকেটের কারসাজি ঠেকাতে এবার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিলামে পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। ৩০ এবং ৩১ ডিসেম্বর, ই-নিলামের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আমদানি করা কয়েকশ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করা হবে। তবে রাজস্ব বাড়াতে ম্যানুয়েল পদ্ধতিও সচল রাখার দাবি জানিয়েছেন নিলাম ব্যবসায়ীরা।
যুগের পর যুগ ম্যানুয়েল পদ্ধতিতেই হয়েছে শত শত কোটি টাকার পণ্য নিলাম। নিলামকৃত পণ্যের একটি নমুনা টেবিলের ওপর রেখে হাতে-গোণা কয়েকজন বিডারের উপস্থিতিতে চলে পণ্যবেচা। এর ফলে প্রায়ই পণ্য যেমন অবিক্রিত থেকে যেত, তেমনি সামান্য কিছু পণ্য বিক্রি হলেও তার ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতো সরকার। ফলে বছরের পর বছর শেডে পড়ে থাকা পণ্য নষ্ট হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত সাড়ে আট হাজার কন্টেইনার ভর্তি পণ্য রয়েছে, যেগুলো আমদানিকারক খালাস না নেয়ায় নিলামে বিক্রির জন্য কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৪২৪টি বিভিন্ন মডেলের গাড়ি, ৪ হাজার ৪৪৬টি এফসিএল কন্টেইনার, ১০ হাজার মেট্রিক টন ওজনের ৯০ হাজার প্যাকেজ আইটেম।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ কমিশনার ব্যারিষ্টার বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, সিন্ডিকেটের কারসাজি ঠেকাতে ও সরকারকে নায্যমূল্য দিতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিলামে পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনের মাধ্যমে বিডে অংশগ্রহণ করা যাবে।
প্রথমবারের মতো -ই -অকশনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ বিভিন্ন ধরণের ফেব্রিক্স, সিরামিক টাইলস, সিরামিকের ফুলদানী, ইঞ্জিন অয়েল, হাইড্রোলিক অয়েল এবং গার্মেন্টস এক্সেসরিজ বিক্রি করবে। নিলামে তোলা পণ্য যে কোনো ক্রেতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের ওয়েবসাইটে পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাচ্ছে। এক্ষেত্রে -ই- অকশনে পারদর্শিতার অভাবে ম্যানুয়েল পদ্ধতিও সচল রাখার দাবি জানিয়েছে নিলাম ব্যবসায়ী সমিতি।
কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফেরদৌস আলম বলেন, বিডারদের সুবিদার্থে ই-নিলামের পাশাপাশি ম্যানুয়েল পদ্ধতিও সচল রাখতে হবে।
কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, বিডার ই-নিলামে পারদর্শী না, এমনকি কাস্টমসও পারদর্শী না। তাই ই-নিলামের পাশাপাশি ম্যানুয়েল পদ্ধতিও সচল রাখলে প্রতিযোগিতা ও অংশগ্রহণ বাড়েবে। ফলে বাড়বে রাজস্বও।
উল্লেখ্য, গত চার বছরে নিলামে বিক্রি না হওয়া অন্তত ১ হাজার কন্টেইনার ভর্তি পণ্য ধ্বংস করতে বাধ্য হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ।