জাতীয় ডেস্ক :
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অভিযান চালিয়ে পাখি শিকারের একাধিক সরঞ্জামসহ বেশ কয়েকটি শিকারি পাখি উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুরে শ্রীমঙ্গল উপজেলার লামুয়া গ্রামের পাখি শিকারি হারিস আলীর বাড়ি থেকে এসব উদ্ধার করা হয়। তবে দীর্ঘদিন থেকে পাখি শিকার ও পাচারের সঙ্গে জড়িত হারিসকে আটক করতে পারেনি বন বিভাগ।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বন বিভাগ, র্যাব -৯ ও ‘Stand For Our Endangered Wildlife’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে সাথে নিয়ে শ্রীমঙ্গলের লামুয়া গ্রামে পাখি শিকারি হারিস মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তবে অভিযানের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় তার বাড়ি থেকে পাখি শিকারের সরঞ্জাম একাধিক জব্দ করা হয়। এসব সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে কোড়া ফাঁদ ও বন মোরগের ফাঁদ, ১০টি গুলতি, পাখি শিকারের ৭টি জাল, ৫টি খাঁচা ও বেশ কিছু সজারুর কাটা। একই সাথে ২টি কোড়া, ৩টি ঘুঘু, ও ১টি শিকারি মোরগ উদ্ধার করা হয়।
শ্যামল কুমার মিত্র বলেন, উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলো বর্তমানে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ার জানকিছড়া বন্যপ্রাণী রেসকিউ সেন্টারে বনবিভাগের অধীনে আছে। বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ শিকারী লোকটির বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
অভিযানের শ্যামল কুমার মিত্র ছাড়াও রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, জুনিয়র ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট তাজুল ইসলাম, জুনিয়র ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট রীশু বড়ুয়া, ফরেস্ট গার্ড সুব্রত সরকার, র্যাব -৯ ডিএডি গোলাম সারোয়ার এর টিম এবং ‘Stand For Our Endangered Wildlife’ টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডও হতে পারে। একই অপরাধ ফের করলে শাস্তি ও জরিমানা দ্বিগুণের বিধানও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া কোনো ব্যক্তি পরিযায়ী পাখির মাংস ও দেহের অংশ সংগ্রহ বা দখলে রাখলে অথবা বেচা-কেনা করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
