অনলাইন ডেস্ক :
গুলশানের একটি অভিজাত শপিং মলে বোমা হামলার পরিকল্পনা করেছিল জেএমবি। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঈদুল আজহার আগের দিন আগে ওই শপিং মলে জঙ্গিরা দুইটি শক্তিশালী পাইপ বোমা রাখে।
বোমাগুলো যে সরবরাহ করেছিল, সে প্রতারণা করেছে। বোমা দুইটির ভিতর বালু ভরে জেএমবিকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে জেএমবির বোমা হামলার পরিকল্পনার তথ্য কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট জেনে যায়।
সিটিটিসির একটি টিম শপিং মল ঘেরাও করে বোমা দুইটি উদ্ধার করে। বোমা দুইটি পরীক্ষা করে দেখে, বালু ভরে সেখানে রেখে দেওয়া হয়েছিল। সিলেট থেকে গ্রেফতার করা জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান পুলিশের ৭ দিনের রিমান্ডের প্রথম দিন এসব তথ্য জানিয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেন, ‘আমাদেরই এক সাথী ভাই দুইটি বোমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে হয়তো বোমা বানাতে না পেরে বালু ভর্তি দুইটি বোমা সেখানে রেখে দিয়েছিল।’
সিটিটিসির উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, নাইমুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের গ্রুপে উপরের স্তরে ২/৩ জন আমীর টাইপের নেতা রয়েছে। তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে অনলাইন ভিত্তিক যোগাযোগ বেড়েছে জঙ্গিদের। এর বাইরে বিচ্ছিন্নভাবে জঙ্গিরা নাশকতার পরিকল্পনা করছে। তবে জঙ্গিদের এখন আর বড় হামলা করার কোন সামর্থ্য নেই।
সিলেটের শাপলাবাগের একটি বাসা থেকে গত ১০ আগস্ট রাতে সিটিটিসি অভিযান চালিয়ে শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান (২৬), সানাউল ইসলাম সাদি (২৮), রুবেল আহমেদ (২৮), আব্দুর রহিম জুয়েল (৩০) ও সায়েম মির্জা (২৪) কে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। তারা কথিত আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য গত ঈদুল আজহার আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে তারা গত ২৪ জুলাই রাজধানীর পুরানা পল্টনের রাস্তায় বোমা ফেলে রাখে।
গত ৩১ জুলাই নওগাঁ জেলার সাপাহার এলাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরে বোমা হামলা করে। এছাড়া তারা গত ২৩ জুলাই হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার শরীফে আরেকটি হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর মধ্যে তারা পল্টন ও সাপাহারে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম হয়।
কিন্তু সিলেটে পুলিশের কড়া নজরদারির কারণে তারা ব্যর্থ হয়। তবে ঈদের আগে গাজীপুর এলাকায় তারা একজন জাদুকরকে হত্যা করে। তবে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তাদের দেওয়া এ তথ্যের সঙ্গে গাজীপুরে কোনো মিল নেই। ঈদের আগে গাজীপুর জেলায় কোনো জাদুকর হত্যার ঘটনা ঘটেনি।
সিটিটিসির জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, জেএমবি সেল গঠন করে হামলা চালানোর পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে। ৭/৮ জন দিয়ে সেল গঠন করলে তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। এ কারণে এখন নির্দিষ্ট একজনকে দিয়ে হামলা চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
একজন ব্যক্তি নির্দিষ্ট স্থানে বোমা রেখে আসেন। এর আগে একজন ব্যক্তিই হামলার পরিকল্পনা সফল করতে রেকি করে। অনলাইনে বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে তারা নিজেদের মধ্যে সংকেতের মাধ্যমে যোগাযোগ করে।