নিজস্ব প্রতিনিধি:
আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ ৩১ মে-২০২৫ উপলক্ষে গুমের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন “অধিকার” সাতক্ষীরা শাখার আয়োজনে শনিবার বেলা ১১ টায় শহরের খুলনা রোড মোড়স্থ শহীদ আসিফ চত্বরে উক্ত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
“অধিকার” সাতক্ষীরা জেলার হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার এবং সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এড. শেখ আলমগীর আশরাফের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাতক্ষীরা শহরে থেকে গুমের শিকার ডাঃ মোখলেসুর রহমানের পিতা আব্দুর রাশেদ, গুম হওয়া যুবদল নেতা আবু সেলিমের স্বজন রেজাউল ইসলাম, সাতক্ষীরা জজকোর্টের আইনজীবী এড. আকবর আলী, অধিকার সাতক্ষীরার সদস্য নজরুল ইসলাম ঢালী, শ্রমিকদলনেতা রেজাউল ইসলাম রেজা, সাংবাদিক আবু বকর, শাহজাহান আলী মিটন প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, অধিকার সাতক্ষীরার সদস্য সাংবাদিক ফিরোজ হোসেন। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এসময় মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধনে গুম হওয়া মোখলেছুর রহমানের পিতা শেখ আব্দুর রাশেদ বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার ছিলো খুনি, এই খুনি
সরকারের খুনি পুলিশ বাহিনী ২০১৬ সালে ৪ আগষ্ঠ আমার সন্তানকে থানা হাজতে রাখে। এরপর সেখান থেকে তৎকালীন ওসি এমদাদ তাকে গুম করে। সেই থেকে এখনও আমার ছেলে গুমই রয়েছে। বর্তমান সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন আমার সন্তানকে খুজে বের করে দেওয়া হউক।
গুম হওয়া সেলিমের স্বজন রেজাউল ইসলাম বলেন, ২০১১ সালের ২৯ মে যুবদলনেতা আবু সেলিমকে ঢাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে গুম করা হয়। আজও তার কোন সন্ধান পায়নি তার পরিবার।
“অধিকার” সাতক্ষীরার হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার এড. শেখ আলমগীর আশরাফ অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে গুমের শিকার যে সব ব্যাক্তি একনও ফেরত আসেননি তাঁদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জনগনকে জানানো এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্ত্রী-সন্তানরা যাতে গুম হওয়া ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব পরিচালনা এবং স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বেচা কেনা এবং ভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থা করা। তিনি আরো বলেন, গুমের পর কিছু ব্যাক্তিকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং পরে তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে পাওয়া গেছে। তাই ভারতে আর কোন গুমের শিকার ব্যক্তিরা আছেন কি-না সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারত সরকারের সাথে কূটনৈতিক পর্যায়ের যোগাযোগ স্থাপন করে তা জানার জন্য তিনি আহবান জানান। যে সমস্ত ব্যক্তি গুমের পর ফেরত এসেছেন, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি এসময় গুমের সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার করাসহ ৫ দফা দাবী পেশ করেন।