আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজা যুদ্ধবিরতি কার্যকরের নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম হয়ে যাওয়ার কিছু পরই উত্তর গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। রবিবারের (১৯ জানুয়ারি) বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি বেসামরিক জরুরি পরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত আটজন নিহত ও কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সময় ভোর সাড়ে ছটায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কথা ছিল। এর মাত্র এক ঘণ্টা আগে চুক্তি অনুযায়ী যে ৩৩ জন জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল, হামাসের কাছে তাদের নাম প্রকাশের দাবি জানান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নাম জানতে না পারার কিছুক্ষণ পরেই এই হামলা শুরু হয়।
গাজার উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে কেবল ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ ইসরায়েলি এয়ারক্র্যাফট ও আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র। যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত পূরণে হামাস ব্যর্থ হলে হামলা অব্যাহত থাকবে বলেও হুমকি দিয়েছেন তিনি।
যুদ্ধবিরতিতে আন্তরিকতার কোনও ঘাটতি ছিল না দাবি করে হামাস জানিয়েছে, মাঠ পর্যায়ে কারিগরি ত্রুটির কারণে সময়মতো জিম্মিদের তালিকা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে তারা। তবে তাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানানো হয়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামাস হামলা চালানোর পর থেকে এই যুদ্ধ শুরু হয়। হামলায় অন্তত এক হাজার ২০০ নাগরিক নিহত ও ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল। এরপরই হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অভিপ্রায়ে গাজার সামরিক আগ্রাসন শুরু করে তেল আবিব। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজা স্বাস্থ্য অধিদফতর দাবি করে আসছে।
এই যুদ্ধের প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। গাজা যুদ্ধের রেশ ধরে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুথি ও ইরানের সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে অস্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যে কিছুটা শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। তবে সর্বশেষ হামলার কারণে সে সম্ভাবনা এখনও বহু দূরেই রয়েছে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় ট্যাংক দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। বিমান ও ট্যাংক হামলার কারণে উত্তরাঞ্চলীয় বেইত হানুন শহরের মানুষ আবার প্রাণভয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদন হওয়ায় তারা নিশ্চিন্তে কেবল ঘরে ফিরেছিলেন।
এদিকে, হামাসপন্থি সংবাদমাধ্যম রবিবার জানিয়েছে, রাফা থেকে ফিলাডেলফি করিডোর এবং মিসর ও গাজার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ইসরায়েল।