হোম অন্যান্যসারাদেশ গর্ভফুলের কোষ প্রতিস্থাপন চিকিৎসায় সুস্থ করোনা রোগী

গর্ভফুলের কোষ প্রতিস্থাপন চিকিৎসায় সুস্থ করোনা রোগী

কর্তৃক
০ মন্তব্য 97 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগীর চিকিৎসায় অমরা বা গর্ভফুলের কোষ প্রতিস্থাপন পদ্ধতি (প্ল্যাসেন্টাল সেল ট্রিটমেন্ট) অনুসরণ করে আশাতীত সফলতা পেয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্তত দেড় মাস কোমায় থাকা ওই রোগী ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।

সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউজার্সির হল নেম মেডিকেল সেন্টারে টানা ৪৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছেন এডওয়ার্ড পিয়ার্স নামে ৪৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ব্রডওয়ে থিয়েটারে সেট ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেন।

গত ৯ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এডওয়ার্ড। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, সাধারণ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। এ কারণে চিকিৎসক তাকে সাধারণ ওষুধ দেয়ার পাশাপাশি বাসায় থাকার পরার্মশ দেন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এডওয়ার্ডকে। এর চারদিন পর অবস্থা আরও গুরুতর হয়ে পড়ায় ভেন্টেলেটর সাপোর্ট দিতে হয় তাকে। এমনকি, একপর্যায়ে তার হৃৎপিন্ড ১৫ সেকেন্ডের জন্য বন্ধও হয়ে গিয়েছিল। সেসময় চিকিৎসকদের চেষ্টায় তা আবার সচল করা সম্ভব হয়।

এডওয়ার্ড পিয়ার্স বলেন, ‘এরপর যা জানি তা হচ্ছে, আমি জেগে উঠলাম, আর সেটা ছিল পাঁচ সপ্তাহ পর।’

তিনি বলেন, ‘আমার ফুসফুস পরিষ্কার হচ্ছিল না, আমার নিউমোনিয়া ছিল, কোনওভাবে কিডনি ফেইলরও হচ্ছিল। তখন ডায়ালাইসিসের কথা বলা হচ্ছিল, যদিও তার আর দরকার পড়েনি।’

এডওয়ার্ডের স্ত্রী পিক্সি জানান, তার স্বামীর চিকিৎসায় চিকিৎসকদের জানা পথ ফুরিয়ে আসছিল। এ কারণে তারা পিক্সির কাছে এডওয়ার্ডের চিকিৎসার জন্য প্ল্যাসেন্টাল সেল ট্রিটমেন্ট-এর মতো অপরীক্ষিত পদ্ধতি ব্যবহারের অনুমতি চান। তিনি অনুমতি দিলে এডওয়ার্ডের শরীরে অন্তত ১৫ জায়গায় বিপুল সংখ্যক সুস্থ প্ল্যাসেন্টা কোষ প্রবেশ করানো হয়।

এর কিছুদিনের মধ্যেই তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। মাত্র ১০ দিনের মাথায় এডওয়ার্ডের ভেন্টিলেটর খুলে দেয়া হয়। চিকিৎসকরা ধীরে ধীরে তাকে ঘুমের ওষুধ দেয়াও কমিয়ে দেন। তিনি নিজে নিজে খাবারও খেতে পারছিলেন। অবশেষে গত ১ মে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান এ মার্কিনি।

এডওয়ার্ড পিয়ার্সের এ চিকিৎসা পদ্ধতি পরিচালনা করেছিল ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান প্লুরিস্টেম থেরাপিউটিকস। তাদের দাবি, এখন পর্যন্ত যতজন কোভিড-১৯ রোগীকে ‘প্ল্যাসেন্টাল সেল ট্রিটমেন্ট’ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে অন্তত ৭৫ শতাংশেরই আর ভেন্টিলেটরের দরকার হয়নি।

সম্প্রতি করোনা রোগীদের ওপর এ পদ্ধতির ‘সদয় ব্যবহারের’ অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। সাধারণত, যেসব রোগীর চিকিৎসায় প্রচলিত প্রায় সব পদ্ধতি ব্যবহারে তেমন কোন উন্নতি হয়নি এবং অবস্থা অতিসঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছে, তাদের ওপর এ ধরনের অপরীক্ষিত পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন