চন্দন চৌধুরী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট : ‘খেলা দেখাচ্ছি’ বলে মনসা মন্দিরের প্রতিমা দা দিয়ে ভাংচুর করেছে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের কদমতলায় তারকনাথ ধামে।
শনিবার সকাল ১১টায় এ ঘটনার পর অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নূরে আলম(১২) ও তার বান্ধবী সাদিয়া(১৪) কে আটক করে আশাশুনি থানা পুলিশ।
এদের মধ্যে নূরে আলম ঢাকার একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। সে একই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে। এছাড়া অপর অভিযুক্ত বান্ধবী সাদিয়া একই এলাকার সাদেক হোসেনের মেয়ে ও তুষারডাঙা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শী সন্যাসী দেবব্রত মন্ডল বলেন, রাতে যাত্রা শেষে তারা গাছের নিচে ঘুমিয়ে ছিলেন। এসময় এক কিশোর ও কিশোরীকে দাঁ দিয়ে মনসা প্রতিমা ভাংচুর করতে দেখেন তিনি। ধরতে গেলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্থানীয় এক সাংবাদিক ভিডিও ধারন করতে গেলে পুলিশ তাকে বাঁধা দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদের সাদিয়া নামের ওই কিশোরী জানায়, তার বন্ধু নূরে আলম মন্দিরের সামনে দিয়ে যাবার সময় পুকুরপাড়ে একটি দাঁ দেখতে পায়। সে এটা নিয়ে ‘খেলা দেখাচ্ছি’ বলে মন্দিরে ঢুকে মজার ছলে প্রতিমা ভাংচুর করে।
মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ মন্ডল বলেন, প্রতিবছর এখানে মনসা পূজা, যাত্রাপালা সহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়ে থাকে কিন্তু কখনোই এরকম অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। আজকের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ ঘটনার পরপরই স্থানটি পরিদর্শন করেন বড়দল ইউপি চেয়ারম্যান জগদীশ চন্দ্র সানা, খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ সদস্যরা।
আশাশুনি উপজেলরা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরন চক্রবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, কুদ্দুস সরদার নামের এক ব্যক্তি মন্দিরে বেড়া দেওয়ার কাজ করছিলো। গরমে কান্ত হওয়ায় সে তার দাঁ’টি রেখে পার্শ্ববর্তী পুকুরে গোসল করতে যায়। তখনই এই ঘটনা ঘটে।
আশাশুনি থানার পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসা পড়ুয়া এক কিশোর ও কিশোরীর বিরুদ্ধে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যেই তাদেরকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট