খুলনা অফিস:
খুলনায় মাদ্রাসা ছাত্র মুসা শিকদার হত্যা মামলার রায়ে ৪ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ ও ২ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে।খুলনার সিনিয়র দায়রা জজ মো: মশিউর রহমান চৌধুরী বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রূপসা উপজেলার আলাইপুরের বনি আমিন শিকদার (২০), রাহিম শেখ (২১), রাজু শিকদার (২০) ও নুহু শেখ (২৭)। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আসামীদের গলায় ফাসি দ্বারা ঝুলিয়ে রাখতে আদেশ দেয়া হয়েছে। খালাস পেয়েছেন সিরাজ শিকদার (৫২) ও জসিম শিকদার (৫৯)।
পিপি এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায়ে ৩০২/৩৪ ধারায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি বনি আমিন শিকদার, রাহিম শেখ, রাজু শিকদার ও নুহু শেখকে ৩৬৪/৩৪ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অনাদায়ে প্রত্যেককে ১ বছর করে সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়। এ মামলার দায় থেকে খালাস পেয়েছেন জসিম শিকদার (৫৯) ও সিরাজ শিকদার (৫২)। এই হত্যা মামলায় ছয় আসামীর সকলেই কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। ৬ আসামীর মধ্যে ৪ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল।
মামলার বিবরণ জানা যায়, ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে রূপসা থানার আঠারোবেকি নদীতে আলাইপুর গ্রামের মুদি দোকানদার মাদ্রাসা ছাত্র মুসা শিকদারের লাশ পাওয়া যায়। মুদি দোকান থেকে মালামাল বাকি নেওয়া ও গুলতি মারা নিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে একদিন আগে বিরোধ হয়েছিল। এ বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। এরপর ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে হত্যার অভিযোগ দায়ের করেন মুসার পিতা মোস্তকিম শিকদার। মামলায় ৪ জনের নাম দেয়া হয়। এরা হলেন, বনি আমিন শিকদার, রাহিম শেখ, নুহু শেখ ও রাজু শিকদার। আদালতের বিচারক এ মামলাটি তদন্ত করে নথিভুক্ত করার জন্য রূপসা থানার তৎকালীন ওসিকে নির্দেশ দেন। এরপর ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারী থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয় (রূপসা থানার মামলা নম্বার ১২, তারিখ ১৫/০১/২০১৯)। মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা ডিবিতে হস্তান্তর হয়। জেলা ডিবি’র এস আই মুক্ত রায় চৌধুরী মামলাটি তদন্ত করেন। তিনি ২০১৯ সালের ৩০ মে আদালতে ৬ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করেন। এজাহারভুক্ত ৪ জনের সাথে নতুন যুক্ত হওয়া ২ জন হলেন জসিম শিকদার ও সিরাজ শিকদার । আসামীরা সকলেই আলাইপুরের বাসিন্দা। ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয় জেলা জজ আদালতে। বিচারক খুলনার সিনিয়র দায়রা জজ মোঃ মশিউর রহমান চৌধুরী এ মামলার শুনানীকালে ২৪ জনের মধ্যে ২৩ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
মামলাটি রাস্ট্র পক্ষে পরিচালনা করেন পিপি এনামুল হক ও এপিপি এম ইলিয়াস খান। আসামী পক্ষে ছিলেন মো: ফরহাদ আব্বাস ও নিরঞ্জন কুমার ঘোষ।