হোম অন্যান্যসারাদেশ খুলনার সিজেএম কো-অপারেটিভ সোসাইটির ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

খুলনা অফিস :

সরকারি সিদ্ধান্তে বন্ধ হয়ে যাওয়া খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ব খালিশপুরস্থ ক্রিসেন্ট জুট মিল লিমিটেডের শ্রমিকদের সমবায় প্রতিষ্ঠান ‘সিজেএম ওয়ার্কার্স কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’র ২০৯ জন সদস্যের জমাকৃত ২ কোটি ১৯ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সদস্যরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদস্যদের পক্ষে মোঃ মাহফুজুর রহমান। মিলের প্রকল্প প্রধান এবং সোসাইটির ৯জন পরিচালক এবং চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান জোটবদ্ধ হয়ে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বন্ধকৃত জুট মিলের সকল শ্রমিকের অর্থ সঠিকভাবে প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজেই শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ ক্রিসেন্ট জুট মিলের প্রকল্প প্রধান ও কো-অপারেটিভ সোসাইটির ১১জন কর্মকর্তা জোট হয়ে সংস্থার ২০৯ জন সদস্যের অর্থ ছাড় না দিয়ে আটকে দেন। দীর্ঘ দুই মাস তালবাহানার পর প্রকল্প প্রধান সদস্যদের কাছ থেকে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে সংস্থার লোন বাবদ গ্রহণকৃত টাকার কয়েকগুণ বেশি অর্থ কেটে রেখে বাকি পাওনা ছেড়ে দেন। যা ছিল প্রকল্প প্রধান ও সোসাইটির পরিচালকদের পূর্ব পরিকল্পিত।

সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, বিজেএমসি অথবা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের সোসাইটির অর্থ কেটে রাখার নির্দেশ ছিল না। কিন্তু এ অর্থ কেটে রাখার সঙ্গে প্রকল্প প্রধান নিজেই জড়িত বলে অভিযোগ করেন তারা।

আরো অভিযোগ করা হয়, কো-অপারেটিভ সোসাইটি একটি সমবায় পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। এটি সাধারণ শ্রমিকদের অর্থে পরিচালিত। সংস্থাটি মিলের শ্রমিকদের আর্থিক সংকটের সময় সদস্য হিসেবে লোন দিয়ে থাকে। কিন্তু সমবায়ের নিয়ম অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনা সুদে লোন দেয়ার বিধান রয়েছে। অথচ শ্রমিকদের নিকট থেকে স্বাক্ষর নিয়ে টাকার অংক ফাঁকা রেখে লোন দেয়া হয়।

পরবর্তীতে কো-অপারেটিভ সোসাইটির অফিস সহকারী (কেরানি) আব্দুস সালাম ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে সদস্যদের সাপ্তাহিক মজুরি থেকে প্রতি সপ্তাহে ৩শ’ টাকা হারে কেটে ১৯ শতাংশ হারে সুদে-আসলে সংস্থায় জমা নেন। পরবর্তীতে জমাকৃত টাকা সংস্থার পরিচালকরা ভাগাভাগি করে নেন।

ফলে মিল বন্ধ অথবা চাকরিচ্যুতির সময় লোনের অতিরিক্ত টাকা সুদে-আসলে গ্রাচ্যুইটি থেকে বা তাতেও সংকুলান না হলে পিএফ থেকে কেটে নেয়। এতে করে অনেক সদস্যকে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়। এ অবস্থায় অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের বিচার ও আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত পাওয়ার দাবি জানান তারা। এ সংক্রান্ত বিষয় মিলের মহাব্যবস্থাপক, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়, সমবায় মন্ত্রণালয়, কেসিসি মেয়র, পুলিশ কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশন, র‌্যাব এবং জেলা সমবায় দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিকদের পক্ষে অংশ নেন মোঃ আতিয়ার রহমান, আব্দুল ওহাব, দরবেশ আলী, মোঃ রফিকুল ইসলাম, আব্দুল গণি, নাসির উদ্দিন, মোহাম্মদ জালাল, মোহাম্মদ রুহুল আমিন, আকবর আলি, আব্দুস সালাম, মোঃ আবুল কাশেম, হাসেম আলী, মোঃ বাদশা, আবুল কাশেম, নূর আলম, সাহেব আলী, মইনুদ্দিন, আলমগীর, আশিকুর রহমান, আলী আহমেদ, মোহাম্মদ সিরাজ, মো. এজাবুল প্রমূখ।

s

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন