মোংলা প্রতিনিধি:
মোংলা বন্দরের পশুর নদে ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ থেকে কয়লা উত্তোলন শেষ হলেও এখন পর্যন্ত জাহাজ ওঠানো সম্ভব হয়নি। গত ৬ ডিসেম্বর ডুবে যাওয়া ওই জাহাজ থেকে ৫০০ টন কয়লা ওঠানো সম্ভব হয়েছে। কয়লা ছিল ৮০০ টন। বাকি ৩০০ টন কয়লা পানির সাথে মিশে গেছে। এখন ডুবে যাওয়া কার্গোটি জাহাজটি উঠানোর জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে মালিকপক্ষ। জাহাজটি উঠাতে রবিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরের পর দুটি বাল্কহেট পাঠানো হয়েছে। ওই বাল্কহেট দিয়ে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে জাহাজটি পশুর নদ থেকে টেনে উঠানো হবে।
গত ১৭ নভেম্বর পশুর নদের চরকানা এলাকায় ৮০০ টন কয়লা নিয়ে যশোরে যাওয়ার সময় তলা ফেটে ডুবে যায় ‘এমভি প্রিন্স অব ঘষিয়াখালী’ নামে কার্গো জাহাজ। মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়ায় অবস্থান করা মার্শাল আইল্যান্ড পতাকাবাহী মার্চেন্ট শিপ ‘এমভি দুবাই নাইট’ থেকে কয়লা বোঝাই করে যশোরের নওয়াপাড়ায় একটি বেসরকারী কোম্পানিতে নেওয়া হচ্ছিলো।
ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ মালিক মোঃ বশির হোসেন বলেন, গত ১৭ নভেম্বর তলা ফেটে ৮০০ টন কয়লা নিয়ে ডুবে যায় তাদের জাহাজ। এরপর ১৯ নভেম্বর থেকে প্রথমে কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু করা হয়। টানা ১৭ দিন পর ৫০০ টন কয়লা ওঠাতে পেরেছেন তারা। বাকি ৩০০ টন কয়লা পানির সাথে মিশে গেছে। ৫০০ টন কয়লা উঠাতে তাদের ১৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন ডুবে যাওয়া জাহাজটি উঠাতে যশোরের নওয়াপাড়া থেকে দুটি বাল্কহেট আনা হয়েছে। এই বোট দুটি দিয়ে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ডুবে যাওয়া তাদের জাহাজ উঠানোর কাজ শুরু করা হবে।
পশুর নদে কয়লা নিয়ে জাহাজ ডুবির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান-মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী হারবার মাষ্টার মোঃ বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এই দূর্ঘটনা মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের বাইরে। তাই জাহাজ চলাচলে ঝুঁকি নাই। তবে কয়লা নিয়ে ডুবে যাওয়ার সাথে সাথেই মালিকপক্ষকে ১৫ দিনের মধ্যে কয়লা এবং জাহাজ উঠাতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু ১৫ দিনে তা সম্ভব হয়নি। তাই তারা সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছে। সময় বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিন থেকে চার দিনের মধ্যে মালিকপক্ষ ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ উঠিয়ে ফেলবেন’।
এদিকে ৩০০ টন কয়লা পানির সাথে মিশে যাওয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ন সম্পাদক মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, ‘কয়লা একটি বিষক্ত ময়লা। এটি পানির সাথে মিশে যাওয়ায় জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের ক্ষতি হবে। এটা দায়িত্বের চরম অবহেলা হয়েছে। এটা দেখার কেউ না থাকার ফলে বারবার এই সমস্যাগুলো হচ্ছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘পশুর নদ সুন্দরবনের প্রাণ। এ ধরনের ঘটনা সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের এক ধরণের আঘাত আসে’।